সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০০৮

পর্দা এবং বোরখা (শেষ পর্ব)


কোরআনের আয়াত অনুযায়ি হাতের পাতা, পায়ের পাতা এবং চেহারা বের হলে কোন অসুবিধা নেই। পর্দা রক্ষার জন্য বোরখা পরিধান করতে হবে এমন কোন ইন্ঙিত দেয়া হয়নি। বোরখার রং বা হুল কতটুকু হবে সে ব্যপারেও কিছু বলা হয়নি।

কিন্তু কওমি মাদ্রাসা এবং তাবলিগে জামাতের মতে বর্তমানের যুগের উপর ভিত্তি করে সমস্ত উলামারা এ সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন যে বোরখা পর্দা করতে হবে নিম্ন রুপ:

বাইরে বের হতে বোরখা পরিধান করতে হবে।
সে বোরখা হবে পা পর্যন্ত লম্বা এবং কালো কাপরের (সিনথেটিক) । নিচের পার্ট ঢোলা-ঢালা পায়ের পাতা পর্যন্ত। উপরের পার্ট প্রায় হাটুর নিচে চলে যায় ঝুল। এরপর মুখ ঢাকার জন্য নেকাব। বাকি থাকে চোখ। চোখ ঢাকার জন্য জরজেটের ২টা পার্ট, ঝুল প্রায় বুক পর্যন্ত।
সাথে কালো হাত মোজা এবং পা মোজা (স্কিন মোজা নয়)।
ছবি- ১

কথা হচ্ছে আল্লাহ তা’য়ালা সব বিষয়ে জ্ঞাত। যুগের অবস্থা কখন কেমন হবে তা আল্লাহ তা’য়ালা ভালো করেন জানেন। যদি এমন করে বোরখা পড়ার প্রয়োজন হতো তাহলে তিনি কোরআনে উল্লেখ করেই দিতেন।

কোন উলামাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি ইসলামের হুকুম বানানোর। এটি সীমালংঘনেরই নামান্তর।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে অনেক কিছুই তো দেয়া নেই কোরআনে।
কথা হলো সারা কোরআন ব হুবার রয়েছে আল্লাহ মানুষকে বুদ্ধিমান প্রানি হিসেবে তৈরি করছেন। স্বাভাবিক বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে বলা হয়েছে।

স্বাভাবিক বুদ্ধি সম্পন্ন লোক কখনও উপরোক্ত ফর্মুলায় পর্দা করার কথা বলবেন না।

এবার আসি কোরআন অনুযায়ি আমরা কিভাবে পর্দা রক্ষা করতে পারি।
এ ব্যপারটা অনেক টা ব্যক্তিগত। কে কিভাবে পর্দা রক্ষা করবেন তা নিজের ব্যপার। ব্যপারটা যায়গা ভেদে আলাদা হয়।

নিচের পোষাক পরিধান এর সব গুলোই আমার কাছে মনে হয় পর্ডা রক্ষার জনয় যথেস্ঠ:

প্রথম কথা হচ্ছে ” ইন্নামাল আ’মালু বিন্নিয়াত”।
অর্থাৎ, ইচ্ছেটা ঠিক হতে হবে। আমি এমন ভাবে পোষাক পরিধান করবো বা বডি ল্যাংগুয়াজ আমার এমন হবে যাতে করে অনর্থক বিশৃংখলা সৃষ্টি না হয় সমাজে।

১।আপনি ফুল হাতা জামা পরতে পারেন। বড় ওড়না দিয়ে শরির ঢাকতে পারেন। মাথায় কাপড় দিতে পারেন।

২। কেউ কেউ হাটু পর্যন্ত কোট এর মত বোরখা পরে থাকে। উপরে উড়না বা স্কার্ফ।

৩।শীত প্রধান দেশে যেই পরিমান শীতের কাপর পরা হয় তাতে অমুসলিমও পর্দার জন্য সওয়াব পেয়ে যেতে পারে।
তবে মাদ্রাসার হুজুর রা দেখলে বলবে আপনার ইমান শেষ, কারন আপনি বিধর্মির পোষাক, জিন্স পড়েছেন।

৪। বাংলাদেশের অনেকে লম্বা বোরখা পরে ,উপরে স্কার্ফ। মুখ খোলা।

৫। কেউ ফুল হাতা জামা পরে গায়ে ওড়না জড়ায় এবং মাথায় স্কার্ফ থাকে।

মূল কথা হলো মার্জিত থাকা। এবং একজন সুস্থ মানুষ জানেন কিভাবে মার্জিত থাকতে হয়। আগা থেকে মাথা পর্যন্ত বোরখা জড়িয়ে যদি নিয়ত খারাপ হয় তাহলে কোন ফায়দা নেই।

মাদ্রাসা গুলোতে যতবার বলা হয় “সদা সত্য কথা বল” তার থেকে ১০০ গুন বেশি বলা হয় পর্দা করো, বোরখা পরো।
কোন দরকার নেই ঐ রকম পর্দা যা একটা মেয়ের প্রতিদিনের চলা ফেরা কে ব্যঘাত ঘটায়। দুর্বল করে দেয় মানসিক এবং শাররিক ভাবে।

নিয়ত কে শক্ত করতে হবে। পর্দার দায়িত্ব কেবল নারির নয়।
উলামাগন এমন ভাবে বলছেন যে নারী কাপরের ভেতর ঢুকলে দুনিয়ায় শান্তি মিলবে।

ইসলামটাকে নষ্ট করে ফেলছে এ ধরনের হুজুরেরা। ইসলামটাকে পুরুষদের জন্য বানিয়ে ফেলছে।

আপনাদেরকে একটা অনুরোধ করবো:

জামাতি ইসলাম, মাদ্রাসার হুজুর অথবা তাবলিগ জামাত কে দেখে ইসলাম কে চিনবেননা দয়া করে। নিজের পড়ুন। কোরআন পড়ুন। ইসলাম কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি না যে , যা মন চায় তাই ফতোয়া দিবে।

নিজে পড়ুন, নিজে জানুন, নিজে বুজুন।

রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০০৮

মৃত্যু এস প্রিয়দের কাছে



একটু দূরে দূরে থাকো এ মনের। বেশী কাছাকাছি না আসাই ভালো। ভাগ্যবান এবং দূর্ভাগ্যবান দুটোই হওয়া বিপদজনক। কোনটা যে জয়ী হবে ,বলতে পারবোনা। কাছের জনদের জন্য যেমন সময়ের কাছে আত্না বাজি রাখি তেমনি পৃথিবীর ক্লেশ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য তাদের মৃত্যু কামনা করি স হজে। ঘুম থেকে উঠে আমার অবয়ব যাদের জন্য সৌভাগ্যের প্রতিক, আমি তাদের সেই দূপুরেই কস্ট দুর করি মৃত্যু দিয়ে।
মানুষ ব্যথার ভুলতে সুখ স্বপ্ন দেখে। আমি ধংসের কল্পনায় ব্যথা ভুলে যাই। নিরাময় হিসেবে আশংকায় বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যু খুব বেশী ভালো মনে হয়। ভালোবাসি তাদের যারা কাছের। তাই শান্তি দিতে চাই। মৃত্যু দিতে চাই।

তোমরা কাছে এসোনা। আমাকে তোমাদের সাথে মানায়না ঠিক। জরাজীর্ন মনের জীবন যাপন খুবই অযৌক্তিক ঠেকে মনে। ওপারে চলে যখন যেতেই হবে কিসের এত মাথাব্যথা? বরং চলো মাথা উপড়েই ফেলি। এই দেখো, কি হচ্ছে এসব! বলেছি কাছে এসোনা, অজান্তে দলে ভীড়ে যাবে।:) শুধু উপড়ে ওঠার সিড়িতে ঘাম ঝরানো। বিশ্বাস কর সমস্ত শান্তি অনন্ত ঘুমে।

আপাতত, আমি একটা দ্বীপ বায়না করেছি। ঈশ্বর নিশ্চয়ই ছুটিতে আছে, কোনো সারা শব্দ নাই। সবার আড়ালে। তাদের মুখের কালো-ধূসর রেখা গুলো তখন ´ব হুদূর। ঈশ্বর ছুটি থেকে ফিরলেই সব দূঃখ কূপোকাত।

বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০০৮

রাফ খাতা

কখনও কখনও জীবনের সাথে
সৎ হওয়ার প্রয়োজন নেই,
সম্ভবও নয়।
চার দিকে তখন কারা যেনো
মুচকি হেসে যায়।
ভালো করে চেয়ে দেখি
নিজেও আছি তাদের সাথে।

আমি আমার দিকে তাকিয়ে থাকি
একটা ভান্ঙা আয়নার মত।
মাঝে মাঝে আমার শুধু
এই ভান্ঙা আয়নাই থাকে।

তবে বরাবরই আমি আশাবাদি।
নিজেকে যে ভালোবাসি ভীষন।

এখনও একটা মেয়েকে চেনার চেষ্টা করছি
যে সন্মান করতে জানে অন্যের নিজস্বতা
এবং চাওয়া কে।

ভাগ্যের মুখোমুখি হই প্রতিদিন,
অপেক্ষা করি ক্ষমা আর আশির্বাদের।
তারই সাথে বাঁচে স্বপ্ন;
সে স্বপ্নের দিকে চলছি অবিরত

আমার আছে বাস্তবতা,
সে বাস্তবতা যাপন করছি।
আছে ভবিষ্যৎ,
যার দিকে চেয়ে আছি অপলক,
আশায় যে,
সেও জানে আমি আসবো।

আমার অতীত ছিলো;
যাপন করেছি তাকে শ্রদ্ধার সাথে।
ডাকিনা,
যায় দিন ভালো যায়।
তবুও কিছু ব্যপারে অস্বছ্ছতা রয়ে যায়
আজীবন।
থাকুক তা বাক্স বন্ধী।

ভাগ্য খেলে আমায় নিয়ে কখনও সখনও
অথচ, আমি নিজেই পাকা খেলুড়ে
তাই জয় হয় আমারই,
কোন না কোন ভাবে।

আশ্রয় নেয়া হয় কখনও সাদা-কালোর
কিন্তু চোখের কোনে
সত্য সর্বদাই সুস্পষ্ট।
কিছু ক্ষতিকর সত্য
মিশে যায় হাওয়ার মাঝে।

এভাবে জীবন বিভাজনের ফলাফল
আসে দিন শেষে হাতে।
গুনে দেখি
আমি আসলে অনেক সুখি।

রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০০৮

পর্দা এবং বোরখা (২)


وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا”

তারা যেনো যা সাধরনত: প্রকাশমান তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।”

প্রকাশমান বলতে হাতের তালু, মুখ-মন্ডল, পায়ের পাতা অর্থাৎ যে সব অন্ঙ সাধারন কাজ কর্মে বের হয়ে যায়।

অতএব, কোরআন মতে আমরা পাচ্ছি মেয়েদের পর্দার কথা বলতে মাথায় বুকে কাপড় দেয়া। দৃষ্টিকে নত করা। এমন ভাবে হাটা, চলা ফেরা যাতে তার দৌহিক সৌন্দর্য্য প্রকাশ না পায় অন্য পুরুষের সামনে।
অর্থাৎ কোন বিশৃংখলা না সৃষ্টি হয় একজন নারীর পোষাক বা এটিটিউটে।

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا9

“হে নবি! আপনি আপনার পত্নিগনকে ও কন্যগনকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগনকে বলুন, তারা যেনো তাডের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদের চেনা স হজ হবে । ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবেনা। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।”

এখানে চাদরের কিয়দংশ টেনে নিতে বলা হয়েছে।

কোরআনে কোথাও বোরখার কথা বলা হয়নি, পর্দা যে কাপড় দিয়ে করা হবে তার রং বা লেন্থ এর কথাও উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়নি পা পর্যন্ত লম্বা কাপর পরতে হবে। বা কালো কাপড়ের বোরখা পরতে হবে।বলা হয়নি হাত মোজা-পা মোজা পরতে হবে। চোখের সামনে ২ পার্টের কাপর ঝুলাতে।

মুল ব্যপার হচ্ছে মার্জিত থাকা। যাতে করে সমাজে কোন রকম উচ্ছৃংখলতার সৃষ্টি না হয়।

বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা স হ তাবলিগ-জামাতের লোকেরা তাদের স্ত্রী এবং কন্যাদের যে সমস্ত বোরখা পরিধান করান তার কথা কোরআনে কোন রকম হিন্টস ও দেয়া নাই।

এব্যপারে তাদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, বর্তমান দুনিয়ার অবস্থা খারাপ। ফেতনা-ফাসাদে ভরে গেছে। তাই মেয়েদের পর্দা আরো কঠোর হতে হবে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মেয়েরা বোরখার ভেতরে ঢুকলেই পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসবে।

কথা হচ্ছে পৃথিবী কখন কোন অবস্থায় যাবে সেটা মহান আল্লাহ ছাড়া আর কে ভালো বলতে পারবেন? এই রকম বোরখা পরার পরিস্থিতি আসলেই আসলে আল্লাহ কি সেটা কোরআনে উল্লেখ করে দিতে পারতেন না?

“……….We did not leave ANYTHING out of this book.” 6:38

কাওকে তো মাতাব্বরি করতে বলা হয়নাই ধর্মের ব্যপারে।

একটা ওড়না দিয়ে মাথা, বুক বলা হয়েছে যেখানে ,সেখানে হাতমোজা-পা মোজা স হ চোখের উপর ২ পার্টের বোরকার ফতোয়া দেয়া কি সীমালংঘন নয়??? এ দায়িত্ব কি ওলামাদের দেয়া হয়েছে? পর্দার ব্যপারে এসব ফালতু পোষাক চাপিয়ে দেয়া দূঃসাহসিক সীমালংঘন।

আল্লাহ তা’য়ালা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত আছেন। ইসলাম স হজ-সুন্দর ধর্ম। ইসলামে এমন কিছু নাই যা মানুষের জন্য ব হন করতে কষ্টকর হবে।

“You shall strive for the cause of GOD as you should strive for His cause. He has chosen you and has placed no hardship on you in practicing your religion - the religion of your father Abraham. …………………………..” 22:78

ধর্ম ব্যবসায়ীরা ভুল ব্যখ্যা দিয়ে ইসলাম টা কে নষ্ট করে ফেলছে।

আল্লাহ বলেছেন,

7:26] “O children of Adam, we have provided you with garments to cover your bodies, as well as for luxury. But the best garment is the garment of righteousness. These are some of GOD’s signs, that they may take heed.”

মানুষের সাভাবিক বিবেক বুদ্ধিকে ব্যব হার করতে বলে ইসলাম। মোরাল প্রিন্সিপালটাই প্রধান ব্যপার। ইনটআরনেটে কোরআনের আয়াত গুলোতে দেখা যায় ব্রাকেটের ভিতর বিশ্লেষন মুলক অর্থ দেয়া হয়। তাদের এই অধিকার কে দিয়েছে কোরআনের আয়াতের অর্থ নিজেদের মত করে করা?

পোষাকের ব্যপারে কোরআনের বেসিক রুল হচ্ছে মার্জিত থাকা। এবং একজন সুস্থ মানুষ কিভাবে মার্জিত থাকতে হয় ভালো ভাবেই জানেন। এ জন্য কোরআনের আয়াতের এক্সট্রা ব্যখ্যা দেয়া কোন প্রয়োজন নেই।

পর্দা এবং বোরখা ! -1

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ হলেও নারীর জন্য আলেম -উলামাগন আর কিছু বাড়িয়ে দিয়েছেন। সেই বাড়িয়ে দেয়ার অন্যতম হচ্ছে “পর্দা”। আর এই পর্দা বলতে আল্লাহর বলে দেয়া পর্দা নয়, মহামান্য আলিম ওলামাগনের ফতোয়া দেয়া পর্দা।
আসুন দেখি মহান আল্লাহ কি বলেছেন আর তিঁনারা কি বানিয়েছেন।

পর্দা/হিজাব সম্পর্কে কোরআন:

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেনো তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অন্ঙের হেফাযত করে। তারা যেনো যা সাধারনত: প্রকাশ মান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে এবং তারা যেনো তাদের মাথার উড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেনো তাদের স্বামী, পিতা, শশুর, পু্ত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতু্স্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, স্ত্রিলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক, যারা নারীদের গোপন অন্ঙ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতিত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেনো তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারনা না করে। মুমুংন, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।”

সুরা আন-নুর, আয়াত-৩১
(http://www.quraanshareef.org/index.php?sid=24&&ano=64&&st=30&&arabic=) থেকে অনুবাদটি নেয়া।

কোরআনে “খিমার” শব্দটি ব্যব হার করা হয়েছে । এই আরবি শব্দটির অর্থ কাভার বা ঢাকনা”
কোন কিছু ঢাকতে যা ব্যব হার করা হয়। সে ক্ষেত্রে টেবিল ক্লথ, জানালার পর্দা, চাদর, ওড়না, পোশাক যেকোন কিছু হতে পারে।

আয়াতটির মধ্যে আরো একটি শব্দ হচ্ছে “ جُيُوبِهِنَّ” শাব্দিক অর্থ হচ্চে “জামার কলার”

এখন যদি “খিমার অর্থ “ওড়না” এবং جُيُوبِ”هِنَّ অর্থ “জামার কলার” ধরি, তবে,

আরবি আয়াত ” وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ” এর শাব্দিক অর্থ হবে
তারা যেনো জামার কলারের উপর উড়না ফেলে রাখে”

তাহলে প্রশ্ন আসে বাংলা অনুবাদ কারি এই আয়াতের অনুবাদ “তারা যেনো মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে” করলেন কেনো?

রুহুল মা’য়ানী অনুযায়ী–

সেই যুগের মেয়েরা ওড়না মাথায় দিয়ে পিঠের দিকে ওড়নার দুই প্রান্ত পিঠের দিকে ফেলে রাখতো, তাতে করে বুক, গলা, কান ইত্যাদি দেখা যেতো।
তাই কোরআনে তাদের মাথার ওড়না জামার কলারের উপর ফেলতে বলা হয়েছে এবং এতে করে ওড়না বুকের উপরেই পরবে।

তাই মনে হয় বাংলা অনুবাদ কারি শাব্দিক অনুবাদ না করে একটু বিশ্লেষন করে অনুবাদ করেছেন (এই অনুবাদের লিটারেরি টার্ম আমার জানা নেই) ।
অনেক টা পারিভাষিক সংগা দিয়েছেন ।

এই অনুবাদ দেখে আমি ভয় পেয়ে গেছি। কারন শাব্দিক ভাবে অনুবাদ না করা মানে আমরা অনেক কিছু অন্যরকম ভাবে জানছি।

যাকগে, পর্দার কথা বলছিলাম।

রুহুল মা’য়ানীর ব্যখ্যাকে যদি না মানি তবে বলতে পারি কোরআনে কেবল
“বুক” ঢাকার কথা বলা হয়েছে মাথা বা চুল নয়। কারন আয়াতে شعر বা رأس´ব্যব হার করা হয়নি। ওড়না কেবল জামার কলার এর উপর অর্থাৎ বুকের উপর রাখতে বলা হয়েছে।

রহুল মা’আনীর ব্যখ্যা মেনে নিলে দারায় যে মাথা, বুক ঢাকতে বলা হয়েছে।

সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০০৮

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে… (১)

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০০৮ – ৫:২৮ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে মহিলা কওমি মাদ্রাসা ঠিক কয়টা আছে আমি বলতে পারবোনা। তবে ঢাকা শ হরের কিছু প্রথম দিকের মাদ্রাসার হাল হাক্বিকত আমি কাছ থেকে দেখেছি। কাছ থেকে বলার চেয়ে ভেতর থেকে দেখছি বললে ভালো হয়।

কেউ নিজে না দেখলে এসব মাদ্রাসার অবস্থা বুঝতে পারবেনা। বেশির ভাগ ব্যপার গুলোতেই এমন পরিমানে অবাক হতে হয় যে যে রাগ বা দুঃখ করার কোনো সুযোগ থাকেনা। একটা অন্যরকম জগত, অন্যরকম কান্ড - কারখানা। গোপনীয়তার কারনে কিছু নাম পরিবর্তন করা হবে। আমি মূলত পাঠক। তাই লিখাতে শব্দচয়ন বা বাক্য গঠনে খুব আটপৌঢ়ে ভাবই থাকবে। শুধু জানা গুলো শেয়ার করা আর কি!

মাদ্রসা গুলো প্রথমে কিভাবে শুরু হয়েছে সে সন্মন্ধে পাবেন এখানে http://amarblog.com/geducacha/19673

তবে বর্তমানে যে মাদ্রাসা গুলো হচ্ছে সেটা হয়তো একদল হুজুর অথবা পাস করে আসা কোনো মাওলানার মাওলানা বউ শুরু করছে।
প্রথমে ২-৩ রুম নিয়ে পরে ২-৩ তলা পর্যন্ত করছে। প্রথম দিকে নিজের আত্বীয় স্বজন, পাড়ার পরিচিত এবং সবচেয়ে বেশী আসছে নিজের গ্রাম থেকে ছাত্রি।

গ্রমের গরিব এবং ধর্ম ভীরু ধনী পরিবার গুলো থেকে মেয়ে গুলো আসে। এর সাথে থাকে মানত করা কোনো সন্তান যাকে জন্মের সময় মাদ্রাসায় পরানো হবে বলে মানত করা হয়েছে।

ইদানিং শহরের অনেক মেয়েরা মাদ্রাসাতে পড়াশোনা করে।এতিমদের জন্য নানা রকম ফান্ড থাকে। কোনো কোনো ধনী আছেন শর্ট - কাট নেকি কামোনোর জন্য এ কজন এতিমের সারা বছরের সব খরচ ব হন করে থাকেন। এ বুদ্ধি অবশ্য হ জুর রাই বাতলে দেন।

চলবে………

(লিখাগুলো আসলে আমার দেখাগুলো)

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে… (২)

রবিবার, ২ নভেম্বর ২০০৮ – ৪:০৮ অপরাহ্ন

কয়েকজন হজূর বা মাদ্রাসা শুরু করার আগ্রহী লোকজন মিলে কিছু পুজি নিয়ে মাদ্রাসা চালানো শুরু করে। পরবর্তিতে ছাত্রীদের বেতন হয় প্রধান আয়ের উৎস। তবে বিদেশ থেকেও নানাভাবে-নানাখাতো অনুদান পেয়ে থাকে। কিছু মাদ্রাসার বড় কর্তারা সরাসরি বিদেশি সাহায্য যোগার করে থাকে। দেশগুলোর মধ্যে মিশর, সৌদি এবং কুয়েত প্রধান।

ইনটারেস্টিং একটা তথ্য হচ্ছে, এই বড় কর্তা (মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা প্রতিস্ঠাতা) বছরের বিশেষ কিছু সময়ে বিদেশে যান কালেকশনের জন্য, এবং যা কালেক্ট করেন তার থেকে কোনো এক হাদিসের (সম্ভবত একটা যাকাড় আদেয়ের হাদিস আছে যে, যে ব্যক্তি যাকাত গুলো কালেক্ট করে আনতো তাকে কিছু দেয়া হত অথবা তাকে ৩ ভাগের ১ভাগ দেয়া হতো ইত্যাদি। আমার খুব একটা জানা নাই। সেই প্রিন্সিপালকে এ ব্যপারে প্রশ্ন করটে পারিনি আমি। গোপন সুত্রে পাওয়া খবর। খবর সত্য এ জন্য যে তার বেতন যা তা দিয়ে সে যে জীবন যাপন করে তা একবারেই সম্ভব না) বদৌলতে সেই টাকার ৩ ভাগের এক ভাগ তার নিজের কোষাগারে জমা হয়। বিশাল আয়ের উৎস!!

কোরবানি ঈদের ছুটিতে ধনী ছাত্রীদের হাছে টাকা জমা নেয়ার রসিদ বই ধরায় দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এবং ছুটির দিন ছাত্রীরা বাসার যাওয়ার আগে দান এবং জাকাতের রহমত-ফজিলতের উপর বিশাল এক তালিম দেয়া হয়। সেই তালিম শুনলে আপনি পরনের কাপড় ও খুলে দিতে চাইবেন।

গরুর চামড়ার টাকার ব্যপারেও তাদের আগ্রহ বেশ থাকে। মাদ্রাসায় সাহায্য চাওয়ার ব্যপারটা এক সময় ভিক্ষা করার থেকেও খারাপ ভাবে চোখে পরে। এক মাদ্রাসায় তো দেখলাম কোন অভিভাবক কত টাকা দিলো তা এনাওন্স করে মাদ্রাসায় বলে দিচ্ছে। তার জন্য দোয়াও বেশি হয়;)। এদের কোনো প্রডাক্টিভ খাত নাই যেখান থেকে মাদ্রাসার খরচ চালানোর জন্য হাত না পাততে হয়।

আগেই বলেছি, কিছু মাওলানা তার মাওলানা বউ নিয়ে মাদ্রাসা শুরু করে। সে ক্ষেত্রে মাওলানা প্রিন্সিপাল এবং তার বউ ভাইস প্রিন্সিপাল (কখনো ব্যতিক্রম হয়) পদে আসিন হন। প্রিন্সিপাল কে বড় হুজুর এবং তার বউ কে “বড় আপা” অথবা “বড় খালাম্মা” ডাকা হয়। আমি প্রথমে যার কথা বলছি তাকে ডাকা হতো “বড় আপা”।

মহিলা কওমি মাদ্রাসায় পুরুষ শিক্ষকও আছেন। এরা ক্লাস নেন পর্দার আড়াল থেকে। এদের কে বিষয়ের নাম অনুযায়ী ডাকা হয়। যেমন: বুখারী হুজুর, মুসলিম হুজুর, ক্বারী হুজুর…..। কখনও তার গ্রামের নাম অনুযায়ী। যেমন: বাগেরহাট হুজুর, কিশোরজন্গ হুজুর, ফরিদপুর হুজুর………। হুজুরেরা ক্লাস নেন পর্দার আড়াল থেকে। গ্রিলের জানালার এ পাশ, ও পাশ এ কালো বা সাদা মোটা পর্দা। কোনো ভাবে পর্দা ভঙের উপায় নাই। তবে হঠাৎ একদিন দেখলাম জানালার উপরে পর্দার একটু ফাক দিয়ে এক জোড়া চোখ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কি বা কাকে দেখছি আরো ভালো ভাবে দেখার জন্য সামনে যেতেই পর্দা উঠে গিয়েছিলো:)।

যাকগে। এর মধ্যে হুজুরদের পিটাতেও দেখেছি। পর্দার সাইড দিয়ে হাত বাড়ায় দিতে হবে, আর সে বেত বসিয়ে দিবে। তবে এটা খুবই কম হয়। সাধারনত শাস্তি দেয়ানো হয় কোনো শিক্ষিকার মাধ্যমে। হুজুররা বলে দিবে কাকে কি শাস্তি দিতে হবে, সেভাবে শিক্ষিকারা করবেন।

চলবে……।

(লিখাগুলো আসলে আমার দেখাগুলো)

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে…(৩)

সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০০৮ – ১২:৩২ পূর্বাহ্ন
থাকা-খাওয়া:

সাধরনত একেক জামাতের মেয়েরা (শ্রেনী । এর প্রকার ভেদ পরে লিখছি) একেক রুমে থাকে। এক রুমের মেয়ে অন্য রুমে ঘুমানো দন্ডনীয় অপরাধ। সাধারনত হল রুম থাকে বিশাল। এক রুমে ১০০ জন থাকতে দেখেছি। উদ্ভাস্তুদের মত লেগেছে। ভয়ন্কর অবস্থা হয় মধ্যে রাতে এত গুলো মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসে যখন পুরো রুমের বাতাসটা ভারি হয়ে যায়। বিশ্রি গন্ধে ভরে থাকে রুম।

কোন কোন মাদ্রাসায় ঠিক পাশেই থাকে বড় আপা -বড় হুজুর গুছানো এপার্টমেন্টে। তাদের থাকার খরচ মাদ্রাসার খরচের সাথেই যুক্ত। ছাত্রীদের বেতনের টাকা আর কালেকশনের নামে ধান্ধাবাজির টাকা দিয়ে আরামে ঘুমায়। আর এত গুলো মেয়ে অসাস্থাকর পরিবেশে দিন-রাত কাটায়।

থাকা খাওয়া ,ক্লাস সব হয় একই রুম। সব কিছু ফ্লোরিং। লিখার জন্য কাঠের ডেস্ক বা বেন্চ থাকে। মাটিতে বসে তার উপর লেখা-পড়া করে থাকে ছাত্রীরা। মেয়েরা বাসা থেকে তোষক, চাদর, বালিশ ,প্লেট, গ্লাস, বাটি ইত্যাদি নিয়ে আসে। সবার সিট নির্দিষ্ট থাকে। প্রত্যেকের থাকে নির্দিষ্ট মাপের টিনের ট্টান্ক। সেখানে তার সব জিনিষ পত্র রাখবে, সর্বদা তালা মেরে রাখার নির্দেশ রয়েছে। চাবি থাকে হয় গলায় চেইনের সাথে অথবা পায়জামার রিবনের সাথে বাধা।

৮০% মেয়েরা মাদ্রাসাতেই খায়। বেতনের সাথে খাওয়ার টাকা দেয়া থাকে। বেতন মাদ্রাসা ভেদে ১০০০-২০০০টাকা। সাধারনত মেনু হচ্ছে : ডাল +ভাত / শুকনা খিচুরী (রেয়ার) - মাছ/মাংস/ ডিম+ডাল+ভাত - ডাল+আলু ভর্তা। ( সকাল- দুপুর- রাত) । বছরে ২-৩ বার সকালে কলা+ পাউয়ারুটি / কাঠাল +মুড়ি ও খেয়েছি:) । শাক -সবজি একেবারে খাওয়া হয়না বললেই চলে। মাঝে মধ্যে অবশ্য ডালের মধ্যে শাক-টাক দিয়ে দেয়।

খাবার দেয়ার সময় হলে বেল বাজে। মেয়েরা লাইন ধরে খাবার আনতে যায়। কোথাও কোথাও রোল কল ও হয়। কেউ ডাবল নিলো কিনা হয়তো তা বোঝার জন্য। মেয়েদের কে যখন ডাল আর আলু ভর্তা দেয়া হচ্ছে টের পেতাম পাশের কড়াইতে শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য দেশি মুরগি ভূনা হচ্ছে। সব যায়গাতেই বুয়াদের সাথে ভালো খাতির থাকলে সুবিধা পাওয়া যায়। টিচারদের খাবারও খাওয়া যায় মাঝে মধ্যে। মাঝে মধ্যে সে সমস্ত মেয়েদের সাথে বুয়াদের ভালো খাতির থাকে তাদেরকে একটু শাক বা ডিম ভাজি করে দেয়।

যেসব মেয়েরা ( যাদের বাসা কাছে এবং সচ্ছল নয়, বাসা কাছেই। মাদ্রাসায় খাবরের খরচ থেকে বাসা থেকে খাবার পাঠানোটা তাদের জন্য খরচ কম পড়ে)। বাইরে থেকে খাবার আসতো তাদের সাথে খাবার চেন্জ করেও খেতো অনেক মেয়ে। বাসা থেকে আসা শুটকি ভর্তা নিয়ে তার মাংসের টুকরা টা দিতো । সেই মেয়েও খেত খুব তৃপ্তি নিয়ে। আবার কিছু ধনীর কন্যা যারা মাদ্রাসার খাবার খেতে পারেনা তাদের খাবারও আসে বাসা থেকে ৬ বাটির টিফিন ক্যারিয়ারে। বন্ধবীদের জন্য স হ খাবার।

বাড়তি খাবার যেমন বিস্কুট, চানাচুর ইত্যাদি দারওয়ানকে দিয়ে দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে আনানো যায়। এক মাদ্রাসায় দেখলাম মাদ্রাসার ভেতরেই দোকান। সেখানে পাউয়া রুটি, কলা, চিপস,এলাচি বিস্কুট, লাড্ডু, চানাচুর, আচার, মোমবাতি ইত্যাদি পাওয়া যায়। বুয়ারা দোকানদারি করে। মাদ্রাসায় সবচেয়ে দামি খাবার হচ্চে “কাচা মরিচ”। কেউ একটা কাচামরিচ দিলে চির কৃতগ্গ হয়ে থাকা হয়।

এই ডাল আর আলু ভর্তা খেতে খেতে জান শেষ। পুষ্টির প্রতি মাদ্রাসার কর্তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। তারা হয়তো জানেইনা। ২-৩ বছর ধরে মাদ্রাসার ভেতরে থাকা মেয়েদেরকে দেখলেই বোঝা যায় অপুষ্টিতে ভুগছে।নেই কোনো খেলা ধুলার ব্যবস্থা। আরে কি বলি! এখানে তো জোরে হাটাই নিষেধ। মাটি ব্যথা পাবে। তারপর মরলে পরে কবরে দু্পাশ থেকে চাপ দিবে যে!

চলবে……।

(লেখাগুলো আসলে আমার দেখাগুলো)

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে… (৪)

সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০০৮ – ৬:৫৮ অপরাহ্ন

পোষাক:

ফুল হাতা কামিজ। শর্ট হাতা কামিজ কড়া রকম নিষেধ। কামিজের ঝুল অবশ্যই হাটুর নিচে। ঢিলা-ঢাল , যাতে শরিরের কার্ভ না বোঝা যায়। কোন প্রানির ছবি থাকবেনা কাপড়ে। ওড়না মিনমাম সারে ৪ হাত লম্বা এবং দুই-আড়াই হাত ব হরের।

মাথায় কাপড় থাকতে হবে সর্বদা। নাইলে শয়তান হিসি করে দিবে। খাওয়ার সময় মাথায় কপড় না থাকলে শয়তান সাথে খাবে। আড়াই প্যাচ দিয়ে ওড়না পড়াতে হয়। চুল দেখা যাবেনা। যেখানে কোনো পুরুষ নেই, পুরুষ রা মেয়েদের কে দেখে ফেলবে এমন কোনো সম্ভাবনাও নাই সেকাহনে এরকম ব্যবস্থা কতটা হাস্যকর ভাবা যায়না।

কিছু মেয়েকে দেখেছি মাথায় আড়াই প্যাচ দিয়ে গোসল করতে ঢোকে এবং আড়াই প্যাচ দিয়েই বের হয় গোসল করে। যেহেতু চুল কাটা হারাম সেহেতু মেয়েদের চুল গুলো থাকে বড় বড়। কোমরের নিচ অব্দি চুলের মেয়ে অনেক এসব মাদ্রাসায়। গোসল করে এত বড় চুল গুলোর উপর ওড়ানা পেচিয়ে রাখাতে কি সওয়াব পাওয়া যাবে আমার বোধ গম্য নয়। চুলের পানিতে ওড়না, কামিজ, গা ভিজে গিয়ে এক ধরনের যা-তা অবশ্থা তৈরি হয়।

সে মেয়েরও এ অবস্থা নিয়ে কোন সমস্যায় নাই। কারন তাকে ছোট বেলা থেকে বলা হইছে যত কষ্ট করা হবে আল্লাহর তত কাছে যাওয়া যাবে। সে মেয়ের চিন্তা শক্তির ধার এত কমিয়ে দেয়া হয় যে ভিজা চুল নিয়ে মাথায় কাপর না দিলে তার পূন্যের কোন ঘাটতি হবেনা ,এই সাধরন জিনিসটা সে বোঝেনা।।

এধরনের মেয়েগুলোর সাথে মাঝে মাঝে মজা করতাম। “চুল দেইখা ফেলছি” বললেই কেপে উঠে মাথায় হাত দিতো ঘোমটা ঠিক আছে কিনা। শিক্ষিকারা খুব খুশি থাকতো এদের উপরে। যারা আড়াই প্যাচ দিতো না বা দিতে পছন্দ করেনা তাদের কে মার্ক করে রাখা হয়। যেকোন অযুহাতে শিক্ষিকারা শাস্তি বা ধমক লাগায়। এরা ব্লাক লিস্টেড

তবে আপনি ২-১ টা মাদ্রাসায় দেখতে পারেন হালকা করে মেয়েরা মাথায় কাপড় দিয়ে আছে। কামিজের ঝুল হাটুর সমান, তবে বুঝতে হবে এই মাদ্রাসার বড় আপা বা বড় খালম্মা নিজেও এরকম কাপর পড়তে পছন্দ করেন। নিজের প্রয়েজনে এরা নিয়ম পাল্টে ফেলতে পারে অকাতরে। এক বড় আপাকে দেখেছি নিজের রুমে ঠিকই ওড়না ছাড়া পরিবারের সবার সামনে হেটে বেড়াচ্ছে আর তার ছাত্রিরা পাশের রুমে গরমে আড়াই প্যাচ মেরে বসে আছে।

তবে কিছু বড় খালাম্মা বা আপারা আছেন ছাত্রীদের জন্য যে নিয়ম করেন তিনি তার থেকে বেশী কঠিন ভাবে তা পালন করেন। এটা তার বিশ্বাসের ব্যপার। আর উপরে যার কথা বললাম তাদের মত শিক্ষিকারা ইসলাম কে ব্য ব হার করে থাকেন।এক বড় আপা / খালাম্মা কে দেখলাম চুলে পার্ম করেছেন। কিন্তূ তার কোন ছাত্রী যদি চুল কাটে , রঙ করে তবে তার জন্য বিশেষ শাস্তি বা বকার রয়েছে।

চুলা কাটা নিষেধের কয়েকটা কারন বলা হয়। খ্রিস্টানেরা সেরকম-সেরকম চুল কেটে স্টাইল করে , তাই চুল কাটা মানে তাদের অনুসরন করা। পাপ!! কেয়ামতের দিন সবাই উলন্গ থাকবে, চুল বড় থাকলে গলা পাশ দিয়ে চুল ছেড়ে দিলে তখন গোপন অন্গ ঢাকা যাবে। মাদ্রাসার অনেক মেয়েরা ঝরে পরা চুল গুলো যত্ন করে জমা করে। কেয়ামতের দিন ওগুলো এডেড হবে। মাদ্রাসায় মেয়েরা উচু করে ঝুটি মা খোপা করতে পারবেনা। উচু করে চুল বাধলে সে বেহেশত তো দুরের কথা বেহেশতের সুবাস ও পাবেনা। এ হচ্ছে কওমি মাদ্রাসার মেয়েদের মাদ্রাসার ভেতরের পোষাক এবং হেয়ার স্টাইল ।

সন্দেহ নেই যে বোরখা পরে বাইরে বেরুতে হবে। কালো সিনথেটিক কাপরের বোরখা। নিচের পার্ট ঢোলা-ঢালা পায়ের পাতা পর্যন্ত। উপরের পার্ট প্রায় হাটুর নিচে চোলে যায় ঝুল। এরপর মুখ ঢাকার জন্য নেকাব। বাকি থাকি চোখ। চোখ ঢাকার জন্য জরজেটের ২টা পার্ট, ঝুল প্রায় বুক পর্যন্ত।

কিছু কিছু মাদ্রাসায় বোরখা গায়ে নেয়ার আগে জামার ওড়না দিয়ে মাথায় আড়াই প্যাচ মেরে তার উপর বোরখা পরার জন্য উৎসাহিত করা হয়। সাথে হাত মোজা (সিনথেটিক) এবং পা মোজা তো ওয়াজিব। এই পোষাকের হের ফের হলে শাস্তির ব্যবশ্থা আছে। ছাত্রিরা যারা বাসা থেকে এসে লেখাপরা করে ছুটির সময় বুয়া দাড়িয়ে থাকে চেক করার জন্য যে তাদের বোরখা, হাত মোজা এবং পা মোজা থিক মত আছে কিনা।

( এক বড় আপা /খালাম্মা কে দেখেছি তিনি তার মাদ্রাসা থেকে যখন বাড়ি আসেন, তখন তার পোষাক পাল্টে যায়। কোথায় কিসের হাত মোজা পা মোজা! বোরখার নিচের পার্টের সাথে একটা ওড়না পেচিয়ে বেড়িয়ে পরেন। কিন্তু তার ছাত্রীর সামনে মুত্তাকির (পরহেজগারিতার) ইমেজ নিয়ে থাকেন। নইলে তার মাদ্রাসার বদনাম হবে তো। অন্যেরা দেখলে খারাপ বলবে। ব্যবসায় মন্দা আসবে।)

এবার ভেবে দেখুন হাত মোজা , পা মোজা আর কঠিন বোরখার প্যকেটে একটা মেয়ে ৩৫ ডিগ্রি সূর্যের নিচে কিভাবে থাকে ? চিন্তার কিছু নাই। মেয়ে লোকের বাসা থেকে বের হওয়া কি দরকার! বাইরের কাজের জন্য বাবা, স্বামি আর ভাই আছেন না!

চলবে……………….

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে… (৫)

বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০০৮ – ১০:৩৪ অপরাহ্ন

জামাত এবং কিতাব (শ্রেনী এবং পুস্তক):
পাঠ্য বছর গুলো ৪ শ্রেনীতে বিভক্ত। কিছু কিছু কিতাব ঠিক রেখে একেক মাদ্রাসায় একেক কিতাব পড়িয়ে থাকে। তবে মূল কিতবাগুলো একই । নিচে মিরপুর ১২ নম্বরের “আলমাদ্রাসা আল মাদানিয়া আলআরাবিয়্যা মিরপুর মাদরাসা ও এতিমখানা“র পাঠ্য সুচি তুলে দিলাম।

ইবতেদায়্যিয়্যা: (প্রাথমিক)১।আছ্ছাফ্ফুল আওয়াল মিনাল ইবতেদায়্যিয়া।
কিতাব সমুহ : নুরানি কায়দা, বাংলা ,অংক, ইংরেজী (১ম শ্রেনী) ও জরুরী দোয়া।

২। আছ্ছাফ্ফুস সানি মিনাল ইবতেদায়্যিয়্যা।
কিতাব সমুহ : আমপারা, দোয়া’মাছনুন, উর্দু কায়দা, বাংলা, অংক, ইংরেজী, ইতিহাস-ভুগোল।

৩। আছ্ছাফ্ফুস সালেস মিনাল ইবতেদায়্যিয়্যা।
কিতাবসমুহ : কোরআন নজরানা (রিডিং) ১-৫ পারা, মাছনুন দোয়া, উর্দু পহলি ও দোসরি, তা’লিমুল ইসলাম, বাংলা, অংক, ইংরেজী (৩য় শ্রেনী),

৪। আছ্ছাফ্ফুর রা’বি’ মিনাল ইবতেদায়্যিয়্যা।
কিতাব সমুহ : কোরআন নজরানা ৬-৩০ পারা, বাংলা, অংক, ইংরেজী,ইতিহাস-ভুগোল, তা’লিমুল ইসলাম ২ এবং ৩,

৫। আছ্ছাফ্ফুল খামেছ মিনাল ইবতেদায়্যিয়্যা
কিতাব সমূহ : এসো আরবি শিখি-১, বাংলা,অংক, ইংরেজী, ইতিহাস-ভুগোল, নূরানি তাজবীদ ১-৩, তা’লিমুল ইসলাম- ৪।

(বিশেষ কোর্স নামে একটি কোর্স চালো করা হয়েছে যারা স্কুল থেকে কমপক্ষে ৬স্ঠ শ্রেনী পাশ করে এসেছে তাদের জন্যে। এরা উপরোক্ড় ৫ টা শ্রেনী না পড়ে প্রথম বছর নিন্মের কিতবাগুলো পড়বে:

বিশেষ বা শর্ট কোর্স:উর্দু কায়দা, উর্দু প হলি, উর্দু দোসরি, বেহেশি জেওর বাংলা ১-৩, এসো আরবি শিখি ১, কোরআন নাজেরা, তা’লেমুল ইসলাম ১-৩।

এরপর পাশ করার পর ” আছ্ছাফ্ফুল খামেছ মিনাল ইবতেদায়্যিয়্যা” জামাতের পাশ করে আসা মেয়েদের সাথে মিজান জামাতে পড়বে। )

মুতাওছ্ছয়াহ (মাধ্যমিক)

৬। মিজান
কিতাব সমুহ: মিজান(ব্যকরন), উর্দু বেহশতি জেওর, এসো আরবি শিখি -২,৩ , কোরআন নাজেরা+ নুঝাতুল ক্বারী, বাংলা, ইংরেজি এবং গার্হস্থ্য বিজ্ঞান।

৭ নাহবেমীর
কিতাব সমূহ: শরহে মিয়াত (আরবী ব্যকরণ) , নাহবেমীর (আরবি ব্যকরন), রওজাতুল আদব (আরবি ব্যকরন) , সিরাতে খাতেমুল আম্বিয়া, মালাবুদ্দা (মাসা’লা), কোরআন শরীফ নাজেরা, বাংলা, অংক, ইংরেজী, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান (৭ম শ্রেনীর)।

সানুবিয়্যাঃ (উচ্চমাধ্যমিক):

৮। কুদুরী
কিতাব সমূহ: হেদায়াতুন্নাহু (আরবি ব্যকরন), উসুলুস শ্বাসী (মাসা’লা), মানতেক- মিরকাত(যুক্তি বিদ্যা), ক্বিরাতে রাশেদা, উছুলে আকবরী, কছাছ, কোরআন তরজমা ২৬-৩০, বাংলা, ইংরেজী, অংক (৮ম শ্রেনী)

৯। হেদায়া
কিতাব সমুহ: হেদায়া আউয়াল এবং সানি (মাস’লা), নুরুল আনওয়ার (মাস’লা), দুরুসুল বালাগাত (অংলকার বিদ্যা), ফয়জুল কালাম, তা হরিক এ দেওবন্দ (দেওবন্দের ইতশাস), কোরআন তরজমা ১-২৫ পারা, বাংলা ১০ম শ্রেনীর।

ফজিলত (স্নাতক)
১০। মেশকাত
কিতাব সমুহ: জালালাঈন (কোরআন তাফসির), মেশকাত শরিফ (হাদিস), আকিদাতু তাহাবী, হেদায়া-৩(মাসা’লা)

তাকমিল: (স্নাতকত্তর)

১১। দাওরা
কিতাব সমুহ: বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, ময়াত্তায়ে মালেক, মুয়াত্তায়ে মোহাম্মাদ।

গতবছর থেকে আরো কিছু আরবী কিতাবের সাথে বাংলা ইংরেজি , অংক, গার্হস্থ্য বি: যোগ করা হয়েছে কারন কওমি মাদ্রাসাকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়া হবে। তাই অনেকটা জাতে উঠার জন্য হেদায়া পর্যন্ত বাংলা বই যোগ করেছেন মাদ্রাসা কর্তাগন। এর আগে কেবল মাত্র ৫ম শ্রেনীর (কওমি বোর্ডের নিজস্ব নিজস্ব সিলিবাসের ৫ম শ্রেনীর বই) বাংলা, অংক, ইংলিশ এবং ভুগোল-ইতিহাস পড়ানো হতো। বর্তমানে অন্যান্য শ্রেনীতে যেসব বই দেয়া হয়েছে সেগুলো ঠিক মত পড়ানোও হয়না।

পাঠ্য পূস্তক ব্যতিত অন্য কোন বই পড়ার কোনো ব্যবস্থা এবং অনুমতিও নেই। এদের কোন লাইব্রেরী নেই। ছাত্রীরা নিজের ব্যববস্থায়ও কোন বাড়তি বই পরতে পারেনা। মাদ্রাসায় গল্প-উপন্যাসের বই পড়া নিষেধ।

কারন হিসেবে বলা হয় সময় নষ্ট এবং নাস্তিকদের বই পড়লে সেই আছর (প্রভাব) পরার একটা সম্ভবানা থেকে। আল্লাহর থেকে মন সরে যায়। কিন্তু কিছু মেয়ে আছে যাদের এই পরার নেশা আছে। তারা বাসায় গিয়েতো পড়েই, মাঝে মাঝে সাহস নিয়ে মাদ্রাসায় পাঠ্য পূস্তকের মোড়কের ভেতর রবিন্দ্রনাথ ঢুকিয়ে পড়ে। তবে ধরাও পরেছে প্রচুর। এবং কোথায় কোন কোন মাদ্রাসায় ধরা পরা বই বড় আপার বুক শেলফে শোভা পাচ্ছে।

গল্প-উপন্যাস নিষেধ হওয়ার আরেকটি কারন হচ্ছে সেখানে প্রেম-প্রীতির গল্প রয়েছে। ছাত্রীরা এগুলো পড়তে পড়তে তাদের মনে প্রেম করার সাধ জাগতে পারে। এবং এতে করে পর্দার বরখেলাপ হবে। সম্ভবত আব্দুস সালাম মিতুল (বোরখা পরা সেই মেয়েটি,গোলাপের কাঁটা, প্রতিক্ষা) এবং আরেকজন আছেন যতদুর মনে পরে কাসেম বিন আবু বকর (বাসর রাত) , এডের উপন্যসে দেখা গেছে কিভাবে বোরখা পরে এং পর্দার সাথে প্রেম করা সম্ভব ইনাদের উপন্যাসে প্রেমিক-প্রেমিকা দেখা হলে “আস্সালামুআলাইকুম” বলে এবং কথার সাথে “আলহামদুল্লিলাহ” , ইনশাআল্লাহ” ব্যব হার করে থাকে।

নেই কোন দৈনিক পত্রিকা বা ম্যগজিন পড়ার ব্যবস্থা। রুমের বাইরের জগতটা সমর্পকে একটা মেয়ের আর কোন ধারনাই থাকেনা। তাই যখন ছুটিতে বাসায় যাওয়ার জন্য মাদ্রাসায় বের হয় তখন আমি অনেক মেয়েকে দেখছি সি এন জি বা রিকশায় বসে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে কোথায় কি ছিলোনা বা নেই।

চলবে……………….

বুকমার্ক:

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে…(৬)

বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০০৮ – ৭:৫৫ অপরাহ্ন

ছাত্রী-শিক্ষক/শিক্ষিকা সম্পর্ক:

শিক্ষকদের সাথে ক্লাস আওয়ার ব্যতিত বিশেষ কোন প্রয়োজন ছাড়া ছাত্রীদের কথা সাধরনত হয়না। সবকিছুই শিক্ষিকাদের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। প্রতিটি রুমে একজন করে শিক্ষিকা থাকেন। রুম বড় হলে ২-৩ জন। সব কিছু এরাই দেখা শোনা করেন। এদের মধ্যে প্রধান হলেন বড় আপা/ খালাম্মা। এই বড় আপা/খালম্মা কখনও মাদ্রাসার মধ্যেই কোন আলাদা এপার্টমেন্ট এ থাকেন অথবা মাদ্রাসার বাইরে নিজের বাড়িতে থাকেন। বাইরে থাকলে সকালে আসেন এবং নির্দিষ্ট সময়ে চলে যান।

বড় আপা/খালম্মা হচ্ছেন বড়(প্রিন্সিপাল) হুজুরের বউ। ভেতরকার সব খবর আদান-প্রদান এই বড় খালাম্মা/ আপার মাধ্যমেই হয়ে থাকে। বড় আপা/ খালম্মা যেহেতু ভেতরের বস তাই তার কিছু চাটুকার থাকাটা স্বাভাবিক ব্যপার। মানে ডান হাত আর বাম হাত থাকে ২-১ টা। সেই কথায় পরে আসছি।

মেয়েদেরকে বেশীর ভাগ মাদ্রাসাটেই “তুই” বলে সন্ম্বোধন করা হয়। তবে পরিস্থতি ভেদে পার্থক্য দেখা যায়। যেমন ধরেন বড় হজুরের মেয়ে বা শালীদের কে সাধরনত তুই বলবেনা কেউ অথাবা বিশাল ধনীর মেয়ে যার বাবা মাদ্রসায় ডোনেট করে থাকে অথবা বড় কোন কাজে আসে। সে কথায় পরে আসছি।

ছোট ছোট বাচ্চাগুলো কে অসচেতন বাবা-মা গুলো দিয়ে যায় মক্তব থেকে পড়তে। মক্তব মানে হচ্ছে যেখানে শুধু কায়দা পড়ানো হয়। প্লে গ্রুপ বলতে পারেন কিন্তু খেলা-ধুলার কোন ব্যবস্থা বা অবস্থা নেই। এই বাচ্চাগুলোর সাথে বাজে ধরনের ব্যব হার করা হয়। সুন্দর ভাষায় কথা বলা কোন হাদিসে নিষেধ দেখিনি। এদের কে ফজর এর সময় উঠানো হয় নামাজ পড়ানোর জন্য যদিও এদের প্রতি নামাজ ফরয হওয়ার অনেক সময় বাকি আছে। (বলা হয় ছোট বেলা থেকে অভ্যেস করানো হচ্ছে। পিচ্চি গুলো পায়জামা,জামা আর ওড়না পরে জুবুথুবু হয়ে থাকে। যে সময় খেলা-ধুলা করার বয়স সে সময় এরা এরকম বন্ধ পরিবেশে থেকে বড় হয়। যখন ছুটির শেষে বাবা মা দিয়ে যায় মাদ্রাসায় তখন এদের চিৎকার করে কান্না দেখলে যে কারো কষ্ট লাগবে।বাবা -মা গুলো সত্যিই অসচেতন।

ফজরের সময় যে শিক্ষিকা যে রুমের দায়িত্বে সে সেই রুমের মেয়েদেরকে উঠাবে নামাজের জন্য। এবং এ জন্য বেত ও ব্য ব হার করে থাকে এরা। ঘুমন্ত ছাত্রীর পাশে দাড়ায় থেকে বেত দিয়ে হালকা করে বাড়ি মারে। নামাজ পড়ে কোরআন শরিফ পড়তে হবে। এর পর আর ঘুমানো যাবেনা। এই সময়টা হলো দুঃস হ। নামাজ -কোরআন পড়ার পর কিযে একটা ঘুম যে আসে! তখনও ক্লাসের টাইম হয়না তারপরও ঘুমানো নিষেধ। চোখ মেলে রাখা যায়না। এক মেয়ে আরেক মেয়েকে জাগিয়ে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে কখনও। টিচার আসতে থেকলে তাকে জাগিয়ে দেয় জাগ্রতজন।

এরপর সাকলের খাবার খেয়ে ক্লাস রুমের জন্য যায়গা পরিস্কার করা হয়। শিক্ষরা পর্দার আড়াল থেকে ক্লাস নেয়। শিক্ষিকারা ভেতরে বেসেই ক্লাস নেন। বড় ক্লাসের কিতাব গুলো সাধরনত শিক্ষকরাই পড়িয়ে থাকেন। কিছু কিছু হজুর কোন কোন ছাত্রীকে মা , বোন বা খালাম্মাও বানিয়ে ফেলে। আমাদের এক হুজুর ছিলেন যিনি এক ছাত্রীকে মা আরেক জন কে মেয়ে বলে ডাকতেন। বেশ কিছু দিন পর সে বিয়ের জন্য মিয়ে খুজছেন। একেবারে না পেয়ে শেষে তার সেই পাতানো মা-মেয়েকেও প্রোপোজ করেছেন।
তবে সবাই এরকম না। সত্যিকারের শ্রদ্ধা পাওয়ার মত অনেক শিক্ষক ছিলেন-আছেন আমাদের। যাদের কথা মনে পড়লে এখনও শ্রদ্ধা জাগে মনে।

যেহেতু বড় খালাম্মা/ আপারা ভেতরের দায়িত্বের বস সেহেতু তাদের কিছু ডান-বাম হাত থাকা স্বাভাবিক। কাউকে কাউকে চাটুকারও বলা যায়। এরা সাধরনত ছোট ক্লাসের শিক্ষিকা। মক্তব বা প্রথম শ্রেনীর কোরআন তাজবিদ পড়ান। কিন্তু পরবর্তিতে এরা ভাইস-প্রিন্সিপালের দায়িত্বে চলে আসেন। এরা ব্যক্তিকগত ভাবে যাদের পছন্দ না করেননা তাদের ব্যপারে নেতিবাচক কথা বলেন বড় খালাম্মা/ আপাদের। আবার বড় খালাম্মা/ আপা যাদের ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ না করেন তাদের নামে বেশী বেশী বলে থাকেন। তবে এ ব্যপারটা অবশ্যই বড় খালাম্মা/ আপা মানুষ হিসেবে কেমন তার উপর নির্ভর করে। কওমি মাদ্রাসা বলে কোন কথা না।

তাই আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি এমন বড় খালাম্মা/ আপার কথা। আমার বড় খালাম্মা/ আপার একজন চাটুকার ছিলো। যার উপরে তার চোখ পরতো তার বারোটা বেজে যেতো। সেই বড় খালাম্মা/ আপা যাদেরকে পছন্দ করতোনা তাদের সব কাজ কর্ম মনিটর করা হতো। এবং যে কোন ছোট কারনে তাদেরকে পাকড়াও করা হতো এবং সুযোগ মত প্রিন্সিপাল কে জানানো হতো। প্রিন্সিপালকে জানাতেন অবশ্যই তার বউ নিজের মতো করে ঘটনা বানিয়ে। এরপর সেই ব্লাক লিস্টেড মেয়েগুলো কে শাস্তি দেয়া হত। কেউ সত্য কথা বলার খুব একটা সাহস পেতোনা, কারন আবার এ কথা বড় আপা/খালাম্মার কানে গেলে জান হালুয়া।

ওস্তাদের সেবা:

ওস্তাদের সেবা নামে কওমি মহলে একটা টার্ম আছে। ওস্তাদের সেবা না করলে এলেম পূর্ণ হবেনা। ছেলে কওমি মাদ্রাসায় এই ব্যপার বেশী দেখা যায়। ওস্তাদের সেবা বলতে ঠিক মত পরা তৈরী করা, তার কথা আমল করার পাশাপাশী তার কাপড় ধুয়ে দেয়া, খাবার এনে দেওয়া, চুল আচড়ে দেয়াও দেখা যায়। সেবার সুবাধে শিক্ষিরা নিজেদের জামা বা ওড়নায় হাতের কাজও করিয়ে থাকে ছাত্রীদের দিয়ে। শিক্ষিকার খাবার এনে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একজন মেয়ে থাকে। যে খাবার তুলে শিক্ষিকার যায়গার পাশে রেখে দিবে। বিকেলে তার চুল আচড়ে দেয়া থেকে ওকুন মারাও ছাত্রীরা কোরে থাকে। জুতা এগিয়ে দেয়া কাপর ধুয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ওস্তাদের সেবা করা হয়।

কিছু কিছু হুজুরও তাদের কাপর চোপর দিতেন মেয়েদের কাছে ( কিছু কিছু মাদ্রাসায় এটা এখন নিষেধ। হুজুর এবং মেয়েদের মধ্যে অতিরিক্ত সখ্যতা গড়ে উঠায় ) কোন কোন মেয়ে আনন্দের সাথে এসব কাজ করে কেউ কেউ বিরক্তির সাথে। আর যদি বড় আপা/খালাম্মা মাদ্রাসাতেই থাকেন তাহলে তো কথাই নেই। তার থালা-বাসন থেকে শুরু করে তার ছোট ছেলে-মেয়ের কাজ কর্মও ছাত্রীরা করে থাকে। কেউ কেউ বড় আপা খুশী হলে বর হজুর খুশী, হোয়াইট লিষ্টে নাম থাকবে, অন্য স্টুডেন্টারা সমীহ করবে বড় আপা/খালাম্মার কাছা কাছি বলে সেই জন্য এসব করে থাকে। কেউ কেউ পুরপুরি উস্তাদ এর সেবা করছে এই নিয়তে।

এসব বড় খালাম্মা /আপারা মেয়ে গুলো খাটায় যখন ইচ্ছা তখন, যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে। কেউ বলার কিছু নাই। এসব মেয়েদের বাবা-মারাও তেল মারে যাতে মেয়ের উপর শুভ দৃষ্টি থাকে। মেয়েকে দেখতে আসলে বড় কগালাম্মা/আপার জন্য এটা সেটা নিয়ে আসে। যারা এসব বড় খালাম্মা/ আপাদের চোখে ভালো তাদের দিয়ে অন্যদের উপর চোখ রাখানো হয়। সময় মত রিপোর্ট চলে যায়। আমি আবারো বলছি মানুষ ভেদে এমন হয়। সব বড় খালাম্মা /আপা এক রকম না। তবে ওস্তাদের সেবার ব্যপারে সব খালাম্মা /আপারাই একমত।

চলবে……………..

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে… (৭)

তেলা মাথায় তেল সবাই দেয়। তবে সে কথা তো হুজুরদের সাথে যাওয়ার কথা না। কেননা, ইসলাম বলে ধনী-গরিব সব সমান। কালো-সাদা সবই এক আল্লাহর সৃষ্টি। কিন্তু না। যেহেতু এরা ইসলামকে ব্যব হার করে মাত্র , সেহেতু এরা টাকা ওয়ালাদের খুব ভক্ত। কথাটা খুব ন গ্ন ভাবে বললেও সত্য। যে সমস্ত ছাত্রী ধনি পরিবাবর থেকে এসেছে এবং বড় হুজুর বা বড় খালাম্মা/ বড় আপার মেয়ে বা বোন তাদের কে চট করে শিক্ষিক-শিক্ষিকারা তুই বলেনা, ধমক দেয়না। তাদের কাছ থেকে স হজে ওস্তাদগন সেবা চাননা ,আশাও করেননা।

গুলশান ২নম্বরের ভাটারা মোড়ে এক মাদ্রাসায় (নাম মনে করতে পারছিনা) দেখলাম "স্পেশাল রুম" কিছু ছাত্রীর জন্য। সেই ৪-৫জন ছাত্রীর একজন সেই মাদ্রাসার বড় আপার আত্বীয়া এবং বাকি সবাই ধনী পরিবারের মেয়ে। তারা আলাদা রুমে বেশী টাকা দিয়ে থাকছে। তারা সেখানে খাট ,চেয়ার-টেবিলও ব্যব হার করছে।

যেখানে একটা হল রুমে শখানেক মেয়ে ,একেক জনের জন্য দেড় হাত বরাদ্দ করা যায়গায় গিজ গিজ করে রাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘুমাচ্ছে , সেখানে মাত্র ২জন ছাত্রী একটা রুম শেয়ার করছে। শখানের জন্য ২-৩ টা টয়লেট এর ব্যবস্থা সেখানে স্পেশাল রুমে ২-৩ জন এটাচড বাথ ব্যব হার করছে। তবে এ ব্যবস্থা অন্য কোন মাদ্রাসায় আছে কিনা এ মুহুর্তে বলতে পারছিনা।।

বড় আপা / খালাম্মার বোন বা মেয়ে থাকলে তাদেরকেও ছাত্রীরা সমীহ করে চলে। অন্যায় হলেও কিছু বলার সাহস পায়না। সমস্যা হচ্ছে , বড় হুজুর কে বড় আপা/খালাম্মা ঠিক যেভাবে বলছে সেভাবেই বিচার হচ্ছে এবং সে রকমই ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে সে জানছে। সত্যি জানার বড় হুজুরের আর কোন ওয়ে নেই। তবে এরা যদি ইচ্ছে করে তাহলে হয়তো কওমি মাদ্রাসার ভেতরের অবস্থা গুলোর আসল অবস্থা জানতে পারে।

আমি বলবোনা যে সব বড় আপা/খালম্মাই নিজেরদের মত করে ঘটনা বলে বড় হুজুরকে। তবে খুব বড় অংশই এই কাজ করে। কওমি মহিলা মাদ্রাসার সবচেয়ে বড় মাইনাস পয়েন্ট বড় হুজুরের বউ কে মাদ্রাসার ভেতরের দায়িত্ব দেয়া। বড় আপা/বড় খালাম্মার মেয়ে বা বোনরা আরেক ধাপ আগানো। এসব বোন বা মেয়েরা যাদের কে পছন্দ করেননা, তাদের জীবন দোযখ বানিয়ে ছেড়ে দেয় তাদের মা/বোনের মাধ্যমে।
এসব মাদ্রাসা মেয়ে দেখার জন্য দারুন যায়গা। প্রতি মাসেই কেউ না কেউ মেয়ে দেখতে আসে। ফ্যামিলি ভালো লাগলে যদি বড় খালাম্মা/ বড় আপার উপযুক্ত মেয়ে বা বোন থাকে তবে সন্দেহ নাই তাদেরকেই দেখানো হয়। না থাকলে বা তাদের প্রোপোজাল পছন্দ না হলে পরে অন্যান্য মেয়েদের দেখানো হয়। যে মহিলা বা মহিলারা আসে মেয়ে দেখতে তারা সব রুম ঘুরে ঘুরে দেখে। মেয়ে পছন্দ হলে শিক্ষিকাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং শিক্ষিকারা ছাত্রীর অভিবাবকদের সাথে যোগাযগ করিয়ে দেয়।

শিক্ষিকারাও কোন কোন মেয়েকে তার ভাই/ছেলে/ কোন আত্বীয়র জন্য মনে মনে ঠিক করে রাখে। মজার ব্যপার হচ্ছে যে সমস্ত মেয়েরা খুব পর্দায় থাকে ভালো আমল করে তাদের কে শিক্ষিকারা পছন্দ করলেও তার ভাই/ছেলে/ আত্বীয়র জন্য পাত্রী পছন্দ করতে গিয়ে ৯৮% শিক্ষিকা ঠিকই সুন্দরী (তাদের মতে ফর্সা) এবং ধনী পরিবারের মেয়েকেই বেশী প্রায়োরটি দিয়ে থাকেন। হোক না সে কম পর্দানশীলা অথবা কম আমলদার। (কারন, এরা পর্দার গুরুত্বের কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠায় ফেলে)। বিয়ের পর পর্দায় করায় নেয়া যাবে। এখন দরকার হচ্ছে ফর্সা,নাদুস-নুদুস একটা কচিপুতুল ।

চলবে............।

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে…(৮)

শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০০৮ – ৬:৫৩ পূর্বাহ্ন৩২ টি মন্তব্য

কওমি মহিলা মাদ্রাসায় “বান্ধবী” ব্যপারটায় একটু আপত্তি আছে। এক মেয়ের সাথে আরেক মেয়ের বেশী মেশা পছন্দীয় নয় নানা কারনে। এ ব্যপারে এক ছাত্রী থেকে জানতে পারলাম : বেশী মিশলে বেশী গল্প হবে, গল্পের মধ্যে নিজেদের ফ্যামিলির কথা আসবে, ফ্যমিলিতে ভাই-কাজিনদের কথা আসবে, অন্য মেয়ে সেই ভাই বা কাজিনের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এবং এতে সেই মেয়ের তাকওয়া নষ্ট হবে।

অতএব, এক জন আরেকজনের সাথে গল্প করা নিষেধ। উল্লেখ্য যে, এসব মাদ্রাসায় অবসর সময় বলতে আসর নামাযের পর থেকে মাগরিব নামাযের আগ পর্যন্ত। এর মধ্যে না আছে খেলা ধুলার ব্যবস্থা, না গল্প-উপন্যাসের বই পড়া না অন্য মেয়ের সাথে গল্প করা। এক সাথে কয়েকজন বসে গল্প করা যাবেনা। কোন বন্ধুত্ব করা যাবেনা। ফাতেমা বলতে পারবেনা যে হাজেরা আমার বান্ধবী।

পাঠ্য পূস্তক ব্যতিত অন্য কোন বই পড়ার কোনো ব্যবস্থা এবং অনুমতিও নেই। এদের কোন লাইব্রেরী নেই। ছাত্রীরা নিজের ব্যববস্থায়ও কোন বাড়তি বই পরতে পারেনা। মাদ্রাসায় গল্প-উপন্যাসের বই পড়া নিষেধ।
কারন হিসেবে বলা হয় সময় নষ্ট এবং নাস্তিকদের বই পড়লে সেই আছর (প্রভাব) পরার একটা সম্ভবানা থেকে। আল্লাহর থেকে মন সরে যায়।

কিন্তু কিছু মেয়ে যাদের কোনভাবে বই পড়ার নেশা গড়ে উঠে। এরা বাসায় থাকা অবস্থায়তো পড়েই, মাঝে মাঝে সাহস নিয়ে মাদ্রাসায় পাঠ্য পূস্তকের মোড়কের ভেতর রবিন্দ্র-শরৎ স হ শার্লক হোমসও ঢুকিয়ে পড়ে। তবে ধরাও পরেছে প্রচুর। এবং কোথায় কোন কোন মাদ্রাসায় ধরা পরা বই বড় আপার বুক শেলফে শোভা পাচ্ছে।

গল্প-উপন্যাস নিষেধ হওয়ার আরেকটি কারন হচ্ছে সেখানে প্রেম-প্রীতির গল্প রয়েছে। ছাত্রীরা এগুলো পড়তে পড়তে তাদের মনে প্রেম করার সাধ জাগতে পারে। এবং এতে করে পর্দার বরখেলাপ হবে। সম্ভবত আব্দুস সালাম মিতুল এর “বোরখা পরা সেই মেয়েটি” তে দেখে গেছে কিভাবে বোরখা পরে এং পর্দার সাথে প্রেম করা সম্ভব । আরেকজন আছেন যতদুর মনে পরে “কাসেম বিন আবু বকর” (গোলাপের কাঁটা, প্রতিক্ষা র লেখক) । ইনাদের উপন্যাসে প্রেমিক-প্রেমিকা দেখা হলে “আস্সালামুআলাইকুম” বলে এবং কথার সাথে “আলহামদুল্লিলাহ” , ইনশাআল্লাহ” ব্যব হার করে থাকে।

নেই কোন দৈনিক পত্রিকা বা ম্যগজিন পড়ার ব্যবস্থা। রুমের বাইরের জগতটা সম্পর্কে একটা মেয়ের আর কোন ধারনাই থাকেনা। মাদ্রাসায় ঢোকার সাথে সাথে এক অজানা শহরে এসে পরে যেনো সবাই। গেইটে ২৪ ঘন্টা তালা লাগানো। কোন কোন মেয়ে ৬-৭ এমন কি ১ বছর পরেও বাড়ি যায়। এদের অনুভুতি গুলো ভোঁতা হয়ে যায় যেনো। ছোট বেলা থেকে এভাবে থাকতে থাকতে।

এসব মাদ্রাসা থেকে দাওড়া (মাওলানা বলা হয় দাওড়া পাশ করার পর)
পাস করার পর মেধাবী ছাত্রীদের সেই মাদ্রাসাতেই শিক্ষিকা হিসেবে রাখা হয়। অথবা কেউ কেউ বিয়ে করে ঠিক এরকমই নতুন আরেকটা মাদ্রাসা শুরু করে অথবা শুধু মাত্র স্বামী সেবাই নিযুক্ত থাকে।

এদের মধ্যে ২০০ জনে ১ জন এর পর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং আলিম দিয়ে থাকে। যারা কওমি থেকে পাশ করে আলিয়াতে পড়া শোনা করে তাদের প্রতি তাদের কওমি শিক্ষক-শিক্ষিরা খুব অসন্তষ্ট হন। তাদের মতে আলিয়াতে পড়লে আমল নষ্ট হয়ে যায়। তাকওয়ার ঘাটতি ঘটে। ৯৯.৯% কওমি হজুর আলিয়া বা কলেজ-ইউনিতে পড়ার জন্য অনুৎসাহিত করে থাকেন এবং অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে থাকেন।

এসব মেয়েদের মধ্যে কিছু দাখিল-আলিম পাশ করে থাকে। এদের মধ্যে আরো কম কিছু মেয়ে ফাজিল (ডিগ্রি) পাশ করে। এবং .০০০০১ জন আলিয়া মাদ্রসা থেকে এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি সম মানের (দাখিল, আলিম ) পরীক্ষা দিয়ে সাধরন ইউনিতে স্নাতক অথবা ডিগ্রি পড়ে থাকে।

এ পর্যন্ত আসতে প্রয়োজন হয় সেই মেয়ের চরম ইচ্ছা , সাহস এবং পরিবার থেকে স হযোগিতা। কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্বেও সাহস ও পরিবারের স হযোগিতার অভাবে এরা আর বেড়ে উঠতে পারেনা।

বুকমার্ক:

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে…(শেষ পর্ব)

শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০০৮ – ৮:১৯ অপরাহ্ন

এই হচ্ছে কওমি মাদ্রাসার ভেতরকার মোটামোটি অবস্থা। হুজুরদের সম্পর্কে বেশী কিছু বলতে পারছিনা কারন তার থাকে মাদ্রাসার বাইরের অংশটায়। অফিসিয়াল কাজ-কর্ম তারাই পরিচালনা করেন।

কওমি থেকে পাশ করে আসা মেয়েগুলোকে কোন মাসা’লার ব্যপারে প্রশ্ন করুন,সে হাদিস -কোরআন এর উক্তি স হ মাসআলার সমাধান বলে দিবে। উল্লেখ্য যে, গড়ে ২৫% মেয়েরা কিতাব ভালো বুঝে। বাকিরা হয়তো পড়াশোনায় আনন্দ পায়না অথবা টিচারদের পড়ানো আনন্দদায়ক হয়না একারনে কিতাব ঠিক মত বোঝেনা। যখন আপনি এখটু পেঁচিয়ে প্রশ্ন করবেন অথবা একটু কঠিন শব্দ ব্যব হার করবেন তখন দন্ধে পরে যাবে। ভাষা জ্ঞান এদের খুব দুর্বল। তবে ব্যতিক্রম কিছু আছে যারা আপনার সাথে তর্ক চালিয়ে যেতে পারবে। এরা সংখ্যায় এত কম যে আপনি-আমি হয়তো আশে পাশে পাবোনা।

বদ্ধ পরিবেশ আর শুধু মাত্র আরবি কিছু বই পড়ে পাশ করা মেয়েদের কন্ফিডেন্স লেভেল খুব কম থাকে। বডি ল্যন্ঙুয়েজই তা বলে দেয়। শিক্ষকরা বাইরে জগৎ ভালো নয় কেবল এ জিনিসটা বলে বলে থাকেন। কিন্তু কিভাবে সেখানে সারভাইভ করতে হবে সেটা বলেননা। বরং পাশ করার পর স্বামীর ঘরে আরেক জেল খানায় পাঠিয়ে দেয়ার জন্য অভিবাবকদের উৎসাহিত করে থাকেন।

এত গুলো ম্যান পাওয়ার অযথাই নষ্ট করেন এরা। এসব মেয়েদের লক্ষ্য থাকে ইসলাম প্রচার-প্রসার করা। বাংলাদেশে থেকে আরবী আর উর্দু শিখে এরা কিভাবে ইসলাম প্রচার করবে তা হুজুররাই ভালো বলতে পারবেন। ইংলিশ তো দুরে থাক বাংলাতেই ঠিক মত কথা বলতে পারেনা এরা।

বাইরে পড়ুয়া মেয়েদের সামনে এরা দুর্বলতায় নজু হয়ে থাকে অথবা বাইরে পড়ুয়া মেয়েরা বেপর্দা, ইসলাম জ্ঞান নেই বলে তাদের খারাপ চোখে দেখে। সেটা বোঝা যাবে এদের চোখ দেখলেই। এমন একটা ব্যপার থাকবে যে এই মেয়ে তো দোজখের দোরে পৌছে গেছে প্রায়। এদেরকে এভাবেই শেখানো হয়। এমন কি বলা হয় যে , যে মেয়েরা পর্দা করেনা-ছেলেদের সাথে কাজ-কর্ম করে তারা ছেলেদেরই সমতুল্য, অতএব, এসব মেয়েদের সাথেও পর্দার হুকুম রয়েছে। এমন ভাবে ব্রেন ওয়াশ করানো হয় যে অবাক হয়ে যেতে হয় এদের কথা শুনলে।

আমিও আগেও বলেছি ব্যতিক্রম কিছু মেয়ে আছে। কিন্ত তাতে কওমি মাদ্রাসার হুজুর বা আপাদের কোন রকম ক্রেডিট নেই। পুরোটাই তার পরিবারের স হযোগিতা ।

কারো যদি আরো জানতে ইচ্ছে করে তাহলে কিছু মাদ্রাসা ঘুরে আসতে পারেন। অবশ্য ভেতরে শুধু মেয়েদেরকেই ঢুকতে দেয়া হবে।এক দু দিনে খুব বেশী দেখে বুজবেন না। আপনার পরিচিত কোন মেয়ে পড়ে এসব মাদ্রাসায় তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন। “তোমাদের মাদ্রাসায় না কি এমন হয়” একথা না বলে স হজ ভাবে জানতে চান নিয়ম কানুন। শিক্ষিকাদের কাছে জিজ্ঞেস করলে কথার সাথে সাথে সায় দেন ভালো নিয়ম কানুন। আস্তে আস্তে দেখুন কি সব আজব নিয়ম কানুন। অবাক পরে হন। আগে সবটা শুনুন। তারপর প্রশ্ন করুন।

আমার কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিরাদের জন্য আমার এই লেখা আমার অন্যান্য কাজের মতই হতাশা জনক আরেক কাজ। ওনাদের আমি সন্তুষ্ট করতে পারলাম না আর। এ জীবনে না হোক পরবর্তি জীবনে তারা বুঝবে কাজ গুলো খারাপ ছিলোনা। কওমির এ সব ভেতরকার কথা না বললে কিয়ামতের দিন আল্লাহ ঝাড়ি মারতেন ঠিকই দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনের অব হেলায়। জন গনের জানা উচিত এ ব্যবস্থা সম্পর্কে।

কোনো বড় হুজুর/বড় আপা/ বড় খালাম্মা এই লেখা পড়ে থাকলে এবং এ ব্যপারে কোন কোন কথা বলার থাকলে দয়া করে এখানে বলুন। তাতে আমরা আরো কিছু জানতে পারবো আপনাদের মাধ্যমে।

ধন্যবাদ সবাইকে ।

হাতে খড়ি!

এই বিদায়ের পর
আমরা ক্লান্ত হয়ে যাবো।
বিশ্রামে বসবো তখন।
আমাদের ব্যগ-পত্র সামনে রেখে খুলে বসবো
উড়ে বেড়াবে আমাদের সমস্ত স্মৃতি এখান থেকে
শুধু পরে রবে শেষ সন্ঙিত
বিদায়ের শেষ সুর।

একটা ক্ষীন আশা আমদের ডেকে তুলবে
জমাট দূঃখ হতে,
ভালোবাসা প্রত্যাক্ষান করবে এই বিচ্ছিন্নতার,
এখান থেকেই আমরা শুনবো
আমাদের কান্না আর চাওয়া গুলোর আর্তনাদ।

কিন্তু আমরা,
আমাদের এই বিচ্ছিন্নতাকে ব হাল রাখবো
আমরা চলতে থাকবো,
জানিনা যদিও, কোথায়!
আমরা গান গাইতে থাকবো,
আর এমনি আবার হঠাৎ নীরব হয়ে যাবো।

বাতাসে উড়ে বেড়াবে
আমাদের যাবতীয় কথা।
তীব্র ভাবে ঠেকে উঠবে ভালোবাসা।
আবার আমাদেরকে নীরবতা আচ্ছন্ন করবে।

তা সত্বেও আমরা বেঁচে থাকবো।

এই জীবন!
এর মাঝে আছে সব!
আমরা বেঁচে আছি বলে জীবন আছে।
আবার ভোর হবে।
হতেই থাকবে।

তাই,
হে প্রিয়, নিশ্চিত জেনো,
আমাদের দেখা হবে,
তুমি আমি একই বাঁকে
একদিন হবেই দেখা।

২ টুকরো

সরাসরি অগ্নিকক্ষে গন্তব্য
ঝরনার ঘ্রাণে হবে
সংযম সাধন।
তীব্র উষ্ন বাতাসে
আকড়ে রবে সম্ভ্রম।
এভাবে প্রতি পরিক্ষায় পুড়ে
হবে তুমি
পৃথিবীর আকাংখিতা।

অথবা,
মনের হাত ধরে
পূর্ব-পশ্চিম
বাড়াও পা তোমার গভীরতায়।
আরো গভীর, আরো বিস্তৃর্ন হোক
তোমার পৃথিবী।
কথার কালিমায়
ভরে যাবে পথ,
কেউ চাইবেনা হয়তো কাছের করে।
ভালোদের মত ভালো নও যে তুমি।
তবুও বেঁচে থেকে মরবেনা একবারও।

এবার বেছে নাও
বন্ধু,
যে কোনো পথ।

ভালো ছিলাম


যাপিত আব হের স্মৃতিচারনে কুচকে উঠে বাম কুঠি।ভালো ছিলাম। নিজের মত, ডানাময়।প্রাত্যাহিক মন ভালোর বিকিকিনির সুস্থ ক্রেতা ছিলাম। দ্রব্যাদির স্বাভাবিক মূল্যে বিস্বময় সুস্থ মন।
হেট হয়ে আধামেলা দরজায় ফেরত যাওয়ার মত বনিক নই আমি। পাল তুলে ডাকি তাই তোমাকে। ওদিকে ভুল মাস্তুলে চোখে নাচে তোমার। আমার অভিমানি নৌকা পেছন ফিরে চায়।ভালো ছিলাম। নিজের মত, ডানাময়।
এভাবে প্রারম্ভিক বর্তমান শেষে বিশ্লেষনের মাঠে এলোমেলো হয়ে যায় সব গুলি শিউলি। মালার সুতোর দিক ভুল করে ভুপতিত হয়। সে এক করুণ সুর! ইচ্ছের না ভাগ্যের এ পতন গুনে দেখার আগেই মন বিষিয়ে যায় কটকটে বিকেলের চাহনীতে। আরোও থেতলে দিয়ে পা ফেলি ঘরে। একা অন্ধকারের স্যাঁতেস্যাঁতে প্রকষ্ঠের চেপে আসা দেয়ালের মাঝে দেই মাথা এলিয়ে। শুরু হয় স্মৃতি আর সম্পদের তুলনামুলক সাহিত্য। ওদিকে সারা রাত স্বপ্নেরা ঠকঠকিয়ে যায় দরজা। জন্জাল পেরুতে পেরুতে দরজা বন্ধই রয়ে যায় রোজ রাত।
আবার সকাল। আলোর ভেংচির ভয়ে চোখ মেলতে মেলতে আবারও শিউলির পতন। শুরু সেই একই সুর।আসলে ,ভালো ছিলাম। নিজের মত। ডানাময়।

ভয় খা বিধু রে!



আমিও প্রভাত রাঙাই
ইচ্ছের রং মেখে
বিরহের আহ্নিকে
খেয়ালী টিয়ার পিছু
মন উড়ে যাওয়া শিখে।
"যাস কই অভাগী",
পিছু ডাকে কালো কাল
এই তবে লিখা ছিলো
এই তোর দেখ-ভাল?
ভয় খা, বিধু রে
ভয় খা সৃষ্টির
বিষ ধোঁয়া উড়ে নামে
নাম দিলি বৃষ্টির?
তোর পানে জিগ্ঙাসু
কেন মোরে আনলি
ভোর থেকে চাঁদ জাগা
মাটি পানে টানলি।
ভয় খা, বিধু
ভয় খা সৃষ্টির
কেপে যাবি সেই দিন
নিজ নিজ দৃষ্টির।

নিত্যলিপি




ব হুদূর
ভেসে আসে দক্ষিণা
ভোরের নখরামি চক্ষূশুল,
অভাগীর প্রাণহানি অকারনে।
খুব কাছে
পরে থাকে লজ্জা
মুচড়ে উঠা চোখের
পিচুটি মাখা চাহনীতে
সত্যের ঝলকানি,
ফের অভাগীর প্রাণহানি অকারনে।
কোথায় যে
মত্ত সুখ
নিম্ন জাতের ছেনালিতে
দগ্ধ হয়ে এদিকে মরে
সাধু-শয়তান একসাথে।
আবারও হয়,
অভাগীর প্রাণহানি অকারনে।

আমি আর নিঃশব্দের শব্দেরা.



আধেক পরে থাকা জুসের গ্লাস ছাড়া সব কিছু পরিপাটি গুছানো। আগামি দু সপ্তাহ ঠিক এমনি থাকবে। কোথাও কিছুর নড়াচড়া নেই। আমি ছাড়া বাকি সবকিছু প্রভুভীত। নিঃশব্দের একটা যে উদাসী শব্দ আছে, তা সকাল থেকেই আমার ঘরে। কি বোর্ডের শব্দ ছাড়া কিছু তা ভাঙতে পারেনা। মাঝে মাঝে টিভিতে হলিউডের মুভির এড আর টম এন্ড জেরি। আজ টানা ১০ ঘন্টা কোনো কথা বলিনি। মনের পুকুরে সর্বদাই সমুদ্রের উত্তাল তরন্ঙ গনায় নিচ্ছিনা আজ।
এই বিশাল পৃথিবীর এক কোনায়, সব বন্ধন থেকে মুক্ত আমি এখন। চাইলেও কেউ ছুঁতে পারবেনা। :) আমার মৌনোতা ভেন্ঙে দেবার কাছে পিঠে কেউ নেই আজ। আমি উপভোগ করছি এই ছিন্নতা। কজনের ভাগ্যে যোটে এমন নিস্তব্দতা?

সকাল থেকে জুস, ফ্রুট খেয়ে আছি। বাইরে যাবোনা খেতে, নিজেও কিছু কোরে নিবোনা। সব থেকে ছুটি আজ। না খেতে হলেও ভালো হতো। পৃথিবীয় সব থেকে সরে থাকা এক নিরব সৌন্দর্যে ভরপুর এ সময়।
বিকেলের দিকে দেখি অনেকগুলো মিস কল। ম্যসেন্জারেও প্রচুর অফ লাইন মেসেজ। কাছের মানুষগুলো কে শংকায় ফেলে দিয়েছি কিন্চিত:)।
এখন করা একমগ কফি নিয়ে বসছি। রোজার একদিন একদম খাওয়া হয়নি। আজ ইচ্ছে মত রাত জাগবো, বলার কেউ নেই "অনেক বাজলো, ঘুমাও"
আমি ভালোবাসি তোমাকে হে নিরবতা, একা থাকা। ভালোবাসি রাতের দেবতাদের। ভালোবাসি তোমাকেও বন্ধু যে চলে গিয়ে দিয়ে গেলে এমন স্বপ্নিল একাকিত্বের

মৃত্যু এস প্রিয়দের কাছে



একটু দূরে দূরে থাকো এ মনের। বেশী কাছাকাছি না আসাই ভালো। ভাগ্যবান এবং দূর্ভাগ্যবান দুটোই হওয়া বিপদজনক। কোনটা যে জয়ী হবে ,বলতে পারবোনা। কাছের জনদের জন্য যেমন সময়ের কাছে আত্না বাজি রাখি তেমনি পৃথিবীর ক্লেশ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য তাদের মৃত্যু কামনা করি স হজে। ঘুম থেকে উঠে আমার অবয়ব যাদের জন্য সৌভাগ্যের প্রতিক, আমি তাদের সেই দূপুরেই কস্ট দুর করি মৃত্যু দিয়ে।
মানুষ ব্যথার ভুলতে সুখ স্বপ্ন দেখে। আমি ধংসের কল্পনায় ব্যথা ভুলে যাই। নিরাময় হিসেবে আশংকায় বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যু খুব বেশী ভালো মনে হয়। ভালোবাসি তাদের যারা কাছের। তাই শান্তি দিতে চাই। মৃত্যু দিতে চাই।

তোমরা কাছে এসোনা। আমাকে তোমাদের সাথে মানায়না ঠিক। জরাজীর্ন মনের জীবন যাপন খুবই অযৌক্তিক ঠেকে মনে। ওপারে চলে যখন যেতেই হবে কিসের এত মাথাব্যথা? বরং চলো মাথা উপড়েই ফেলি। এই দেখো, কি হচ্ছে এসব! বলেছি কাছে এসোনা, অজান্তে দলে ভীড়ে যাবে।:) শুধু উপড়ে ওঠার সিড়িতে ঘাম ঝরানো। বিশ্বাস কর সমস্ত শান্তি অনন্ত ঘুমে।

আপাতত, আমি একটা দ্বীপ বায়না করেছি। ঈশ্বর নিশ্চয়ই ছুটিতে আছে, কোনো সারা শব্দ নাই। সবার আড়ালে। তাদের মুখের কালো-ধূসর রেখা গুলো তখন ´ব হুদূর। ঈশ্বর ছুটি থেকে ফিরলেই সব দূঃখ কূপোকাত।

তোমাকে ভালোবাসবোনা।আমি সুস্থ হয়ে উঠবো।



কবিতার পর কবিতায় মালা গেঁথে আমি যদি ভরে দিতাম তোমার মনের ঝূড়ি, তাহলে হেসে তাকাতে আমার দিকে? কিংবা দারুন কোনো উপন্যাস লিখে খুব নাম করে ফেললে? অথবা, শাররিক কোনো ঝলাকনিতে হোচট খেলে? আমি ভালো রান্নাও জানিনা বন্ধু। সাদা -কালো কোনো শাড়ি পরেও মুগ্ধ করতে পারবোনা তোমাকে। ওরকম হাসি না যে পলক পরবেনা তোমার। শ্যমা গাল থেকে বেরুবেনা কোনো আলোকদ্যুতি।
বিড়ালের মত হাটতে লেগেছিলাম কিছুদিন, হয়নি। দশ আন্গুলে রোমান্ঞের ছিটেফোঁটাও নেই। দেহটাকে মোলায়েম রাখতে পারিনি চেষ্টার অভাবে। অন্যদের মত নাচ-গানের কোনটাই নেই আয়ত্বে। কেবল মেতে থাকতে পারি সুরে, সব ভুলে। তুমি একবার বলে দেখতে কিছু। সব করতে পারি তোমার জন্য। আমার গালটা এবার ছুঁয়ে দাও। আলতো করে। ধীরে ধীরে। চাইলে চুলটাও। ব্যাস, এতটুকুই বন্ধু। এর জন্য কি চাই বলো।
এই এতটুকুর তীব্র তৃষ্নায় আমি প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি। সমস্ত চেতনা তোমার ঐ স্পর্শের পথ চেয়ে বসে আছে সেই কবে থেকে।তুমি আমাকে এবারের মত বাঁচাও। দেখো, তোমাকে আর ভালোবাসবোনা। এবার আমি ঠিকই সুস্থ হয়ে উঠবো।

Saturday, October 27, 2007

দিনলিপি


সকাল 10 টা

তর্ক করবেনা বলছি
চুপ চাপ শোন,
তুমি বুঝবেনা
মাথা ভর্তি তো গোবর
চুল দেখেই বুঝেছি।
তিন বেলা খাবার আর কাপড়ে
মন ভরেনা?
ঘাড় ধরে বের করে দিবো
,আধ ক্লাস পড়ুয়া মেয়ের
রাস্তা গেছে টানবাজারে।

বিকাল 4 টা

ক্রিং ক্রিং
কি হয়েছে?
ফোন ধরনা যে?
শরীর ভালো তো?
খেয়েছো কিছু?
না খেয়ে থেকোনা ভাইয়া
আমার খারাপ লাগে খুব।
আসছি , একটু পরই
নতুন নাটক আসছে
আজ নাটক দেখবো তোমার সাথে
ডাওনলোড দাও।
ওকে?
লাভ ইউ।

বিকাল 5 টা

বলতো আমার হাতে কি?
পারছোনা?
আমার কোনো কিছুই তুমি খেয়াল করোনা :(
আসার সময় এই মালাটা দেখে মনে হলো
তোমাকে খুব মানাবে।
পরোতো দেখি।
পরোনা, প্লিজ.
.ওয়াও!!
তোমাকে তো মডেলদের মতো লাগছে
প্রথম যেদিন দেখলাম
সেদিনই চোখে আটকে গেছো তুমি,
এরপর আর কোনো মেয়েই পছন্দ হয়না।
সত্যি বলছি, বিলিভ মি।

একটা চুমু খাও
একটু আদর করোনা ।
দাও না....
কি হলো এমন করছো কেন?
সরে যাচ্ছ কেনো?
এসো...
সমস্যা কি তোমার?
আমার প্রতি কোনো টান অনুভব করোনা?
কোনো চাহীদা নাই তোমার??
ভালো লাগছেনা মানে??
এস, ভালো লাগবেনা কেনো!!
ভালো লাগবে।
বি রিলাক্সড।

এরপর-------------------

মনেতে কালো পর্দার যবানিকা টেনে
নিংড়ে রস নেয় পুরুষ আমার
ওদিকে বিকেল আর নাটক
স্বাভাবিক হাসিতে ফিরে যায়
যে যার পথে।
এমন যে রোজ ই কোথাও না কোথাও ঘটে
ওরা তা জানে।

তোমার মৃত্যু



জানো তোমার মৃত্যু হবে কিভাবে?
আমি জানি, বলি তোমাকে
চোখের পলকেরও কম সময়ে
বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে জীবন থেকে।
ধারালো কোনো ছুড়ির আঘাতে নয়
কিংবা শ্বাসরূদ্ধ হয়েও না,
উচু পাহাড় থেকে পরেও নয়,
পানিতে ডুবে, না, তও নয়।
অথচ মরবে কি চরম আঘাতে
বেঁচে থেকে থেকে মরার আগ পর্যন্ত।
একবার বলে দিবো শুধু
"ভালোবাসি না তোমাকে"

দাও শুভ্র মুক্তি



আমাকে দাও শুভ্র মুক্তি
জীবনের পাশে পাশে চলি
অল্প অল্প সুখে।

দাও এক টুকরো হাসি
বন্ধুত্বের,
অস হ্য আনন্দ বা ক্লান্তিতে
একটু বুকে মাথা রাখি।

দেখো কি বলে এ চোখ,
বন্যা দেখনি একবারও
তোমার দুঃখ সারাতে?
কাতরতা কোনো
তুমি ছেড়ে চলে যাওয়াতে?
ঝাপটে পড়তে দাও
খুশির ঢলে সাফলে বা পাওয়ার আনন্দে
তোমার বাহুতে , বুকে।

আমাকে ছেড়ে দাও
বার বার ফিরে আসতে।

সাথে নাও
এক পূর্ন সৃষ্টির মর্যাদাতে।

তারপর দেখো,
তোমার জন্য সুখের একশ পৃথিবী
ধারন করে আছি , এ বুকে।

নাটুকেরা অন্যএ যাও



অহেতুক কালক্ষেপণ
বলেছি তো ভালোবাসবোনা।
ওরকম প্রেমিক সাজায় মানায় যদিও
সন্নাসেই মরি প্রতি পূর্ণিমা।
বরং মটর ছড়াও কিছু
পাশের শহরে,
শতেক ভঙ্গিমার পাবে কিছু রঙ্গিলা।
আমার এ উঠোনে
কেবল চাঁদের আনাগোনা
সাফ-সুতরে লেপে এ স্বর্গ আমার
করোনা কলূষিত
কোনো নাটুকে আধার।

জট খুলে জটাঞ্জলী


এক কপাট স্বাধীনতা
রুম ঝুম বেজে উঠে অষ্টাদশীর বুক
কুঁচকে যায় বয়সের ভ্রু।
দক্ষীণের জানলায় দূরে দেখে লক্ষ্য
জীবন হাওয়াই মিঠাই হয়ে আসে
কঙ্কন হাতে,
ভোরে তার আনাগোনা
একটা দিন হয় এক জীবনের একক।

ঘুরে ঘুরে আনমনে পিছু নেয়
ছলনার বাউলেরl,
ফেরারি হয়ে যায় সে
পৃথিবীর মায়াতে
থেকেও না থেকে।

নিথর দেহ



চুপচাপ যায় আসে শ্বাস-নিশ্বাস.
হাতের আয়ত্বে
মন দেয় এনে বিশ্ব
এ প্রান্ত- ও প্রান্ত
খুজে ফিরে উর্বশী, অন্নপূর্ণা
উহু, তা না,
চোখ বুজে অন্ধকারের আলোতে
খুজে ফিরে
কারো মুখ ভরা
এক চিলতে সুখের হাসি।


2।এক ছটা শক্তি দাওনা প্রভু
শীতে নুইয়্যে পরা মানূষ গুলোতে
ক-ফটা উষ্ণতা ঢেলে আসি।

বাঁশী ও জীবন


ভেঙে গেছে বাঁশী
ফুসফুসে ক্ষত হয়ে আছে সব সুর।
পথিকেরা দুমরায় কেউ চলার পথে
অস্ফুট চিৎকারে
নড়েনা শিমুলের ডাল,
"একদিন গত হলো",
ঢেকে বলে চার্চের ঘন্টা,
প্রতিদিন আরে মিশে যায় ধুলোতে
বাঁশীর জীবনটা।

খাবলে নিবো চাঁদ


রক্তে ঢেউ উঠে পূর্নিমা দেখে
সুজিবনের আশায় জীবন যাপন
এখন ঘুট ঘুটে অন্ধকারে
প্রচন্ড গরমের মতো।
দম বন্ধ করে, অপলক অপেক্ষা
এক টুকরো ঠান্ডা হাওয়ার শব্দ।
রাত ভোরের পালাক্রমে আবার পূর্ণিমা
রক্তে ঠেউ তুলে অবাধ্য।
চাঁদটাকে খাবলে নিয়ে
কাচের কেীটায়
আটকে রাখি ইচ্ছে হয়।
হোচট আর ফাদে পরার সময়গুলো
নিরাময় আনি তুলো তুলো আলোতে।
তোমাদেরও কারো লাগলে বলো।
প্রতি পূর্নিমাতে রক্তে উঠে ঢেউ ভীষন।
আলো ভরা স্বার্থবাদি ঐচাঁদটাকে খাবলে নিতে।

ছুটছি ..........


আকাশের গ হীনের ছুটে গেছে মন
যদিও চোখের েদীড় ঐ নীল পর্যন্ত
ছোট এ জানালায় বাহির দেখা
চোখ বুজে আমি ক্লান্ত হীন, দুরন্ত
অবাধ্য বিশেষনে ভুগেছি অনেক
বাধা ও বেধে রাখা পরেছে কপালে
তবুও, "হে আমার শুভাকাংখিরা
ছুটছি আমি আকাশে পাতালে,
পারো যদি টেনে ধরো মোর রাশ
আমি অনন্ত-ছুটন্ত
ধমকা ঝড়ো হাওয়া ,
এ আমারি প্রকাশ।

একবার, হে জীবন!



নির্জিব চেতনার পচে যাওয়া স্মৃতি তোমাকে
এক এক করে ত্যাগ করবো আজ
জীবনের কোনে যত আছে ভাজে ভাজ।
সাফরে সুতরে, ধুয়ে মুছে
কন কনে শীতে ফুলদাস্নান
এরপরে যদি ভাঙে,
হে জীবন, তোমার অভিমান।
জাপটে ধরে নিঃস্বাশর আনাগোনা
আর কতো?
দিলাম ছেড়ে এ দে হ ও জীবন,
দেখা দাও এবেলা
একবারের মতন।
চোখ ভরে দেখে নেই তুমি,
সৃস্টি অনিবার,
কেনইবা তারা বলে তুমি সুন্দরপ্র
ভুর স্রেসঠ উপ হার!

নারী ও সময়।


সকাল হলো,
আলো পড়লো চোখে।
পাখি গাইলো
বাতাস হাসলো সুখে।

তুমি ডাকলে--
এলাম চলে ছুটে।
তারপর,
শুরু হলো উৎসব ন গরে ন গরে
পৃথিবীর প্রানকেন্দ্রে।
প্রকৃতি বরন করলো আমাদের দুহাত বাড়িয়ে।

এরপর,
সন্ধ্যা বাজলো
সময় হলো ফিরে যাওয়ার।
নাট্য মন্চের কালো পর্দায় যবানিকা টেনে

বললাম--
"চললাম"।
গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত মন
হাতের মুঠোয় করে
পা বাড়ালাম পূবের পথে।

মনে রেখো,"
কিছুই যায়না চলে,
সবই আসে ফিরে ফিরে।
শুধু একবার নারী চলে গেলে


ফিরেনা আর।"

তোমার পথে



ব হুদিন বেঁচে আছি মহূর্তকে পূজি করে
এবার জীবনের দিকে ভাসালাম স্বপ্নের রথ
চলতে চলতে হঠাৎ ঝরনায়
চোখ মেলি কিছুক্ষন
তারপর আবার যাত্রা।
এভাবে শেষ পথে যাওয়ার আগে
উড়ি কিছুক্ষন তোমার আকাশে।
মেঘের সাথে খেলি লুকোচুরি.
একসাথে ফুটাই নীলফুল
একরাত একদিন যার জীবন।
স্বপ্নের বুনন ছিড়ে যায় না বলে
আবার যেনো আসি এ পথে ভুল করে।

একে দেওয়া উঠোন


সে আমাকে ভালোবাসে ভীষন
তার চোখ আটকে আছে আমার চোখে
তাই দেখা হয়না আমার আর
বিশাল সাদা মেঘের আকাশ এ জীবনে।
সে জড়িয়ে রাখে কোম´ল যত্নে
নতুন ঘাসের শিশির
মাখা হয়না আর তপ্ত পায়ে।
আজিবন আমি তার ভালোবাসা
পাশে উড়া পাখিকে দেখে
হাত নাড়ার দরকার নেই তাই আর।
আমি নাকি তার নিয়তি
সব ছেড়ে তাই,
তার পৃথিবীতে আমার বাস।
এভাবে হারিয়ে ফেলি দিনে দিনে
আমার চেনা নদী- সাগর।
সবুজ পাখিটা স্থির হয়ে গেছে
উড়েনা আর,
ভাংঙা পাখা।
অবলিলায় তার ভালোবাসা ধ্বংস করে
আমার নিজস্ব পৃথিবী।
দুঃখ সব নিয়ে গেলাম বলে
আকাশটাও বৃষ্টি করে
বুকের উপড় ফেলে।
আর সে বলে যায়,
সে নাকি আমাকে ভালোবাসে।