সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০০৮

পর্দা এবং বোরখা (শেষ পর্ব)


কোরআনের আয়াত অনুযায়ি হাতের পাতা, পায়ের পাতা এবং চেহারা বের হলে কোন অসুবিধা নেই। পর্দা রক্ষার জন্য বোরখা পরিধান করতে হবে এমন কোন ইন্ঙিত দেয়া হয়নি। বোরখার রং বা হুল কতটুকু হবে সে ব্যপারেও কিছু বলা হয়নি।

কিন্তু কওমি মাদ্রাসা এবং তাবলিগে জামাতের মতে বর্তমানের যুগের উপর ভিত্তি করে সমস্ত উলামারা এ সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন যে বোরখা পর্দা করতে হবে নিম্ন রুপ:

বাইরে বের হতে বোরখা পরিধান করতে হবে।
সে বোরখা হবে পা পর্যন্ত লম্বা এবং কালো কাপরের (সিনথেটিক) । নিচের পার্ট ঢোলা-ঢালা পায়ের পাতা পর্যন্ত। উপরের পার্ট প্রায় হাটুর নিচে চলে যায় ঝুল। এরপর মুখ ঢাকার জন্য নেকাব। বাকি থাকে চোখ। চোখ ঢাকার জন্য জরজেটের ২টা পার্ট, ঝুল প্রায় বুক পর্যন্ত।
সাথে কালো হাত মোজা এবং পা মোজা (স্কিন মোজা নয়)।
ছবি- ১

কথা হচ্ছে আল্লাহ তা’য়ালা সব বিষয়ে জ্ঞাত। যুগের অবস্থা কখন কেমন হবে তা আল্লাহ তা’য়ালা ভালো করেন জানেন। যদি এমন করে বোরখা পড়ার প্রয়োজন হতো তাহলে তিনি কোরআনে উল্লেখ করেই দিতেন।

কোন উলামাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি ইসলামের হুকুম বানানোর। এটি সীমালংঘনেরই নামান্তর।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে অনেক কিছুই তো দেয়া নেই কোরআনে।
কথা হলো সারা কোরআন ব হুবার রয়েছে আল্লাহ মানুষকে বুদ্ধিমান প্রানি হিসেবে তৈরি করছেন। স্বাভাবিক বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে বলা হয়েছে।

স্বাভাবিক বুদ্ধি সম্পন্ন লোক কখনও উপরোক্ত ফর্মুলায় পর্দা করার কথা বলবেন না।

এবার আসি কোরআন অনুযায়ি আমরা কিভাবে পর্দা রক্ষা করতে পারি।
এ ব্যপারটা অনেক টা ব্যক্তিগত। কে কিভাবে পর্দা রক্ষা করবেন তা নিজের ব্যপার। ব্যপারটা যায়গা ভেদে আলাদা হয়।

নিচের পোষাক পরিধান এর সব গুলোই আমার কাছে মনে হয় পর্ডা রক্ষার জনয় যথেস্ঠ:

প্রথম কথা হচ্ছে ” ইন্নামাল আ’মালু বিন্নিয়াত”।
অর্থাৎ, ইচ্ছেটা ঠিক হতে হবে। আমি এমন ভাবে পোষাক পরিধান করবো বা বডি ল্যাংগুয়াজ আমার এমন হবে যাতে করে অনর্থক বিশৃংখলা সৃষ্টি না হয় সমাজে।

১।আপনি ফুল হাতা জামা পরতে পারেন। বড় ওড়না দিয়ে শরির ঢাকতে পারেন। মাথায় কাপড় দিতে পারেন।

২। কেউ কেউ হাটু পর্যন্ত কোট এর মত বোরখা পরে থাকে। উপরে উড়না বা স্কার্ফ।

৩।শীত প্রধান দেশে যেই পরিমান শীতের কাপর পরা হয় তাতে অমুসলিমও পর্দার জন্য সওয়াব পেয়ে যেতে পারে।
তবে মাদ্রাসার হুজুর রা দেখলে বলবে আপনার ইমান শেষ, কারন আপনি বিধর্মির পোষাক, জিন্স পড়েছেন।

৪। বাংলাদেশের অনেকে লম্বা বোরখা পরে ,উপরে স্কার্ফ। মুখ খোলা।

৫। কেউ ফুল হাতা জামা পরে গায়ে ওড়না জড়ায় এবং মাথায় স্কার্ফ থাকে।

মূল কথা হলো মার্জিত থাকা। এবং একজন সুস্থ মানুষ জানেন কিভাবে মার্জিত থাকতে হয়। আগা থেকে মাথা পর্যন্ত বোরখা জড়িয়ে যদি নিয়ত খারাপ হয় তাহলে কোন ফায়দা নেই।

মাদ্রাসা গুলোতে যতবার বলা হয় “সদা সত্য কথা বল” তার থেকে ১০০ গুন বেশি বলা হয় পর্দা করো, বোরখা পরো।
কোন দরকার নেই ঐ রকম পর্দা যা একটা মেয়ের প্রতিদিনের চলা ফেরা কে ব্যঘাত ঘটায়। দুর্বল করে দেয় মানসিক এবং শাররিক ভাবে।

নিয়ত কে শক্ত করতে হবে। পর্দার দায়িত্ব কেবল নারির নয়।
উলামাগন এমন ভাবে বলছেন যে নারী কাপরের ভেতর ঢুকলে দুনিয়ায় শান্তি মিলবে।

ইসলামটাকে নষ্ট করে ফেলছে এ ধরনের হুজুরেরা। ইসলামটাকে পুরুষদের জন্য বানিয়ে ফেলছে।

আপনাদেরকে একটা অনুরোধ করবো:

জামাতি ইসলাম, মাদ্রাসার হুজুর অথবা তাবলিগ জামাত কে দেখে ইসলাম কে চিনবেননা দয়া করে। নিজের পড়ুন। কোরআন পড়ুন। ইসলাম কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি না যে , যা মন চায় তাই ফতোয়া দিবে।

নিজে পড়ুন, নিজে জানুন, নিজে বুজুন।

রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০০৮

মৃত্যু এস প্রিয়দের কাছে



একটু দূরে দূরে থাকো এ মনের। বেশী কাছাকাছি না আসাই ভালো। ভাগ্যবান এবং দূর্ভাগ্যবান দুটোই হওয়া বিপদজনক। কোনটা যে জয়ী হবে ,বলতে পারবোনা। কাছের জনদের জন্য যেমন সময়ের কাছে আত্না বাজি রাখি তেমনি পৃথিবীর ক্লেশ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য তাদের মৃত্যু কামনা করি স হজে। ঘুম থেকে উঠে আমার অবয়ব যাদের জন্য সৌভাগ্যের প্রতিক, আমি তাদের সেই দূপুরেই কস্ট দুর করি মৃত্যু দিয়ে।
মানুষ ব্যথার ভুলতে সুখ স্বপ্ন দেখে। আমি ধংসের কল্পনায় ব্যথা ভুলে যাই। নিরাময় হিসেবে আশংকায় বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যু খুব বেশী ভালো মনে হয়। ভালোবাসি তাদের যারা কাছের। তাই শান্তি দিতে চাই। মৃত্যু দিতে চাই।

তোমরা কাছে এসোনা। আমাকে তোমাদের সাথে মানায়না ঠিক। জরাজীর্ন মনের জীবন যাপন খুবই অযৌক্তিক ঠেকে মনে। ওপারে চলে যখন যেতেই হবে কিসের এত মাথাব্যথা? বরং চলো মাথা উপড়েই ফেলি। এই দেখো, কি হচ্ছে এসব! বলেছি কাছে এসোনা, অজান্তে দলে ভীড়ে যাবে।:) শুধু উপড়ে ওঠার সিড়িতে ঘাম ঝরানো। বিশ্বাস কর সমস্ত শান্তি অনন্ত ঘুমে।

আপাতত, আমি একটা দ্বীপ বায়না করেছি। ঈশ্বর নিশ্চয়ই ছুটিতে আছে, কোনো সারা শব্দ নাই। সবার আড়ালে। তাদের মুখের কালো-ধূসর রেখা গুলো তখন ´ব হুদূর। ঈশ্বর ছুটি থেকে ফিরলেই সব দূঃখ কূপোকাত।

বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০০৮

রাফ খাতা

কখনও কখনও জীবনের সাথে
সৎ হওয়ার প্রয়োজন নেই,
সম্ভবও নয়।
চার দিকে তখন কারা যেনো
মুচকি হেসে যায়।
ভালো করে চেয়ে দেখি
নিজেও আছি তাদের সাথে।

আমি আমার দিকে তাকিয়ে থাকি
একটা ভান্ঙা আয়নার মত।
মাঝে মাঝে আমার শুধু
এই ভান্ঙা আয়নাই থাকে।

তবে বরাবরই আমি আশাবাদি।
নিজেকে যে ভালোবাসি ভীষন।

এখনও একটা মেয়েকে চেনার চেষ্টা করছি
যে সন্মান করতে জানে অন্যের নিজস্বতা
এবং চাওয়া কে।

ভাগ্যের মুখোমুখি হই প্রতিদিন,
অপেক্ষা করি ক্ষমা আর আশির্বাদের।
তারই সাথে বাঁচে স্বপ্ন;
সে স্বপ্নের দিকে চলছি অবিরত

আমার আছে বাস্তবতা,
সে বাস্তবতা যাপন করছি।
আছে ভবিষ্যৎ,
যার দিকে চেয়ে আছি অপলক,
আশায় যে,
সেও জানে আমি আসবো।

আমার অতীত ছিলো;
যাপন করেছি তাকে শ্রদ্ধার সাথে।
ডাকিনা,
যায় দিন ভালো যায়।
তবুও কিছু ব্যপারে অস্বছ্ছতা রয়ে যায়
আজীবন।
থাকুক তা বাক্স বন্ধী।

ভাগ্য খেলে আমায় নিয়ে কখনও সখনও
অথচ, আমি নিজেই পাকা খেলুড়ে
তাই জয় হয় আমারই,
কোন না কোন ভাবে।

আশ্রয় নেয়া হয় কখনও সাদা-কালোর
কিন্তু চোখের কোনে
সত্য সর্বদাই সুস্পষ্ট।
কিছু ক্ষতিকর সত্য
মিশে যায় হাওয়ার মাঝে।

এভাবে জীবন বিভাজনের ফলাফল
আসে দিন শেষে হাতে।
গুনে দেখি
আমি আসলে অনেক সুখি।

রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০০৮

পর্দা এবং বোরখা (২)


وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا”

তারা যেনো যা সাধরনত: প্রকাশমান তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।”

প্রকাশমান বলতে হাতের তালু, মুখ-মন্ডল, পায়ের পাতা অর্থাৎ যে সব অন্ঙ সাধারন কাজ কর্মে বের হয়ে যায়।

অতএব, কোরআন মতে আমরা পাচ্ছি মেয়েদের পর্দার কথা বলতে মাথায় বুকে কাপড় দেয়া। দৃষ্টিকে নত করা। এমন ভাবে হাটা, চলা ফেরা যাতে তার দৌহিক সৌন্দর্য্য প্রকাশ না পায় অন্য পুরুষের সামনে।
অর্থাৎ কোন বিশৃংখলা না সৃষ্টি হয় একজন নারীর পোষাক বা এটিটিউটে।

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا9

“হে নবি! আপনি আপনার পত্নিগনকে ও কন্যগনকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগনকে বলুন, তারা যেনো তাডের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদের চেনা স হজ হবে । ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবেনা। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।”

এখানে চাদরের কিয়দংশ টেনে নিতে বলা হয়েছে।

কোরআনে কোথাও বোরখার কথা বলা হয়নি, পর্দা যে কাপড় দিয়ে করা হবে তার রং বা লেন্থ এর কথাও উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়নি পা পর্যন্ত লম্বা কাপর পরতে হবে। বা কালো কাপড়ের বোরখা পরতে হবে।বলা হয়নি হাত মোজা-পা মোজা পরতে হবে। চোখের সামনে ২ পার্টের কাপর ঝুলাতে।

মুল ব্যপার হচ্ছে মার্জিত থাকা। যাতে করে সমাজে কোন রকম উচ্ছৃংখলতার সৃষ্টি না হয়।

বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা স হ তাবলিগ-জামাতের লোকেরা তাদের স্ত্রী এবং কন্যাদের যে সমস্ত বোরখা পরিধান করান তার কথা কোরআনে কোন রকম হিন্টস ও দেয়া নাই।

এব্যপারে তাদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, বর্তমান দুনিয়ার অবস্থা খারাপ। ফেতনা-ফাসাদে ভরে গেছে। তাই মেয়েদের পর্দা আরো কঠোর হতে হবে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মেয়েরা বোরখার ভেতরে ঢুকলেই পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসবে।

কথা হচ্ছে পৃথিবী কখন কোন অবস্থায় যাবে সেটা মহান আল্লাহ ছাড়া আর কে ভালো বলতে পারবেন? এই রকম বোরখা পরার পরিস্থিতি আসলেই আসলে আল্লাহ কি সেটা কোরআনে উল্লেখ করে দিতে পারতেন না?

“……….We did not leave ANYTHING out of this book.” 6:38

কাওকে তো মাতাব্বরি করতে বলা হয়নাই ধর্মের ব্যপারে।

একটা ওড়না দিয়ে মাথা, বুক বলা হয়েছে যেখানে ,সেখানে হাতমোজা-পা মোজা স হ চোখের উপর ২ পার্টের বোরকার ফতোয়া দেয়া কি সীমালংঘন নয়??? এ দায়িত্ব কি ওলামাদের দেয়া হয়েছে? পর্দার ব্যপারে এসব ফালতু পোষাক চাপিয়ে দেয়া দূঃসাহসিক সীমালংঘন।

আল্লাহ তা’য়ালা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত আছেন। ইসলাম স হজ-সুন্দর ধর্ম। ইসলামে এমন কিছু নাই যা মানুষের জন্য ব হন করতে কষ্টকর হবে।

“You shall strive for the cause of GOD as you should strive for His cause. He has chosen you and has placed no hardship on you in practicing your religion - the religion of your father Abraham. …………………………..” 22:78

ধর্ম ব্যবসায়ীরা ভুল ব্যখ্যা দিয়ে ইসলাম টা কে নষ্ট করে ফেলছে।

আল্লাহ বলেছেন,

7:26] “O children of Adam, we have provided you with garments to cover your bodies, as well as for luxury. But the best garment is the garment of righteousness. These are some of GOD’s signs, that they may take heed.”

মানুষের সাভাবিক বিবেক বুদ্ধিকে ব্যব হার করতে বলে ইসলাম। মোরাল প্রিন্সিপালটাই প্রধান ব্যপার। ইনটআরনেটে কোরআনের আয়াত গুলোতে দেখা যায় ব্রাকেটের ভিতর বিশ্লেষন মুলক অর্থ দেয়া হয়। তাদের এই অধিকার কে দিয়েছে কোরআনের আয়াতের অর্থ নিজেদের মত করে করা?

পোষাকের ব্যপারে কোরআনের বেসিক রুল হচ্ছে মার্জিত থাকা। এবং একজন সুস্থ মানুষ কিভাবে মার্জিত থাকতে হয় ভালো ভাবেই জানেন। এ জন্য কোরআনের আয়াতের এক্সট্রা ব্যখ্যা দেয়া কোন প্রয়োজন নেই।