সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০০৮

কওমি মহিলা মাদ্রাসার অন্দরে… (২)

রবিবার, ২ নভেম্বর ২০০৮ – ৪:০৮ অপরাহ্ন

কয়েকজন হজূর বা মাদ্রাসা শুরু করার আগ্রহী লোকজন মিলে কিছু পুজি নিয়ে মাদ্রাসা চালানো শুরু করে। পরবর্তিতে ছাত্রীদের বেতন হয় প্রধান আয়ের উৎস। তবে বিদেশ থেকেও নানাভাবে-নানাখাতো অনুদান পেয়ে থাকে। কিছু মাদ্রাসার বড় কর্তারা সরাসরি বিদেশি সাহায্য যোগার করে থাকে। দেশগুলোর মধ্যে মিশর, সৌদি এবং কুয়েত প্রধান।

ইনটারেস্টিং একটা তথ্য হচ্ছে, এই বড় কর্তা (মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা প্রতিস্ঠাতা) বছরের বিশেষ কিছু সময়ে বিদেশে যান কালেকশনের জন্য, এবং যা কালেক্ট করেন তার থেকে কোনো এক হাদিসের (সম্ভবত একটা যাকাড় আদেয়ের হাদিস আছে যে, যে ব্যক্তি যাকাত গুলো কালেক্ট করে আনতো তাকে কিছু দেয়া হত অথবা তাকে ৩ ভাগের ১ভাগ দেয়া হতো ইত্যাদি। আমার খুব একটা জানা নাই। সেই প্রিন্সিপালকে এ ব্যপারে প্রশ্ন করটে পারিনি আমি। গোপন সুত্রে পাওয়া খবর। খবর সত্য এ জন্য যে তার বেতন যা তা দিয়ে সে যে জীবন যাপন করে তা একবারেই সম্ভব না) বদৌলতে সেই টাকার ৩ ভাগের এক ভাগ তার নিজের কোষাগারে জমা হয়। বিশাল আয়ের উৎস!!

কোরবানি ঈদের ছুটিতে ধনী ছাত্রীদের হাছে টাকা জমা নেয়ার রসিদ বই ধরায় দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এবং ছুটির দিন ছাত্রীরা বাসার যাওয়ার আগে দান এবং জাকাতের রহমত-ফজিলতের উপর বিশাল এক তালিম দেয়া হয়। সেই তালিম শুনলে আপনি পরনের কাপড় ও খুলে দিতে চাইবেন।

গরুর চামড়ার টাকার ব্যপারেও তাদের আগ্রহ বেশ থাকে। মাদ্রাসায় সাহায্য চাওয়ার ব্যপারটা এক সময় ভিক্ষা করার থেকেও খারাপ ভাবে চোখে পরে। এক মাদ্রাসায় তো দেখলাম কোন অভিভাবক কত টাকা দিলো তা এনাওন্স করে মাদ্রাসায় বলে দিচ্ছে। তার জন্য দোয়াও বেশি হয়;)। এদের কোনো প্রডাক্টিভ খাত নাই যেখান থেকে মাদ্রাসার খরচ চালানোর জন্য হাত না পাততে হয়।

আগেই বলেছি, কিছু মাওলানা তার মাওলানা বউ নিয়ে মাদ্রাসা শুরু করে। সে ক্ষেত্রে মাওলানা প্রিন্সিপাল এবং তার বউ ভাইস প্রিন্সিপাল (কখনো ব্যতিক্রম হয়) পদে আসিন হন। প্রিন্সিপাল কে বড় হুজুর এবং তার বউ কে “বড় আপা” অথবা “বড় খালাম্মা” ডাকা হয়। আমি প্রথমে যার কথা বলছি তাকে ডাকা হতো “বড় আপা”।

মহিলা কওমি মাদ্রাসায় পুরুষ শিক্ষকও আছেন। এরা ক্লাস নেন পর্দার আড়াল থেকে। এদের কে বিষয়ের নাম অনুযায়ী ডাকা হয়। যেমন: বুখারী হুজুর, মুসলিম হুজুর, ক্বারী হুজুর…..। কখনও তার গ্রামের নাম অনুযায়ী। যেমন: বাগেরহাট হুজুর, কিশোরজন্গ হুজুর, ফরিদপুর হুজুর………। হুজুরেরা ক্লাস নেন পর্দার আড়াল থেকে। গ্রিলের জানালার এ পাশ, ও পাশ এ কালো বা সাদা মোটা পর্দা। কোনো ভাবে পর্দা ভঙের উপায় নাই। তবে হঠাৎ একদিন দেখলাম জানালার উপরে পর্দার একটু ফাক দিয়ে এক জোড়া চোখ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কি বা কাকে দেখছি আরো ভালো ভাবে দেখার জন্য সামনে যেতেই পর্দা উঠে গিয়েছিলো:)।

যাকগে। এর মধ্যে হুজুরদের পিটাতেও দেখেছি। পর্দার সাইড দিয়ে হাত বাড়ায় দিতে হবে, আর সে বেত বসিয়ে দিবে। তবে এটা খুবই কম হয়। সাধারনত শাস্তি দেয়ানো হয় কোনো শিক্ষিকার মাধ্যমে। হুজুররা বলে দিবে কাকে কি শাস্তি দিতে হবে, সেভাবে শিক্ষিকারা করবেন।

চলবে……।

(লিখাগুলো আসলে আমার দেখাগুলো)

কোন মন্তব্য নেই: